এবার একটি এককালীন চুক্তিতে সব জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় পাঁচ বছরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস। শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে। হামাসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছেন, গাজা সংঘাতের অবসানের জন্য হামাস একটি চুক্তির জন্য প্রস্তুত। চুক্তিতে থাকবে সকল জিম্মিকে এককালীন মুক্তি এবং পাঁচ বছরের জন্য যুদ্ধবিরতি। জানা যায়, এর আগে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ অবসানে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা নতুন একটি যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছিল। প্রস্তাব করা হয়েছিল, পাঁচ থেকে সাত বছর স্থায়ী একটি চুক্তির।
এ ছাড়া ইসরাইলি কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে সব ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি, যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি এবং গাজা থেকে পুরোপুরিভাবে ইসরাইলি সেনাদের প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছিল।
আজ মিসরের রাজধানী কায়রোতে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে হামাসের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। হামাস বরাবরই দাবি করে এসেছে, যুদ্ধবিরতির কোনো আংশিক চুক্তিতে তারা আর সায় দেবে না। পরবর্তী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অবশ্যই গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার অবসান, বন্দি বিনিময়, উপত্যকাটি থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার ও মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
গত জানুয়ারি মাসে গাজায় তিন দফায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে দুই পক্ষই সম্মতি দেয়। এর প্রথম দফা বাস্তবায়িত হয় ১৯ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবার গণহত্যা শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনো অব্যাহত আছে। মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় দুই হাজার ৬২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
নেতানিয়াহু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন দাবি করা হচ্ছে, পরবর্তী চুক্তিতে সব জিম্মির মুক্তি ও হামাসসহ গাজার অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিরস্ত্রীকরণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে।নিরস্ত্রীকরণের দাবি মানতে নারাজ হামাস। এই ফিলিস্তিনি সংগঠনের মতে, দখলদারিত্ব ও শোষণের মধ্যে অস্ত্রধারণ তাদের জন্মগত অধিকার।হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি আক্রমণ পুনরায় শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ২ হাজার ৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। জবাবে একই দিন থেকে গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত এ যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা ৫১ হাজার ৪৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে।