এবার কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা যখন ক্রমেই তীব্র হচ্ছে, তখন একপাশে দাঁড়িয়ে দৃশ্যপট পর্যবেক্ষণ করছে চীন। একদিকে পাকিস্তান তার দীর্ঘদিনের মিত্র চীনকে পাশে পাচ্ছে, অন্যদিকে ভারতকে একই সঙ্গে দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের সম্ভাবনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক অতীতে ভারত যতবার সীমান্তে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে, তার চেয়েও বেশি ও বড় আকারের সংঘাতে জড়িয়েছে চীনের সঙ্গে। ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ালে চীনের প্রতিক্রিয়া এড়ানো ভারতের পক্ষে কার্যত অসম্ভব।
চীন ইতোমধ্যে পাকিস্তানের জেএফ-৭ যুদ্ধবিমানের জন্য দূরপাল্লার শক্তিশালী পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ শুরু করেছে। আকাশ থেকে আকাশে আঘাত হানতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র মূলত ভারতের রাফালে যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্য করেই তৈরি, যা পাকিস্তানের হাতে বড় কৌশলগত সুবিধা এনে দিতে পারে। শুধু ক্ষেপণাস্ত্র নয়, জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানও পাকিস্তানকে যৌথভাবে তৈরি করে দিয়েছে বেইজিং, যা আসন্ন যুদ্ধে বড় ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার চীন। তাদের তৈরি কে-৮ কারাকোরাম এয়ারক্র্যাফট, আল-খালিদ ট্যাংক এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই ইসলামাবাদকে সরবরাহ করা হয়েছে বা প্রস্তুত রয়েছে। পাকিস্তানও নিজেদের সেনা প্রস্তুতি বাড়িয়েছে এবং সম্প্রতি চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছে, যা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে বাড়তি সুবিধা দিতে পারে।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সরকার ভারতের সঙ্গে সীমান্ত অঞ্চলগুলোতেও চাপ বাড়িয়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যদি যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে চীনের বাহিনী ভারতের উত্তরের সীমান্তে আরও সক্রিয় হয়ে উঠবে। এতে ভারতের জন্য তৈরি হতে পারে ভয়াবহ দুই-মুখো যুদ্ধ পরিস্থিতি। বিশ্লেষণ বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতির ফলে ভারত আঞ্চলিকভাবে অনেকটাই একা হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির পাশাপাশি চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে। এমনকি চীন ভারতের সীমান্তবর্তী কিছু অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে বলেও আন্তর্জাতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যকার জটিল ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিবেশে।