ক্রিকেটবিশ্বে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করছেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। দেশের প্রথম ও একমাত্র আম্পায়ার হিসেবে আছেন আইসিসির এলিট প্যানেলে। তবে দেশ সেরা এই আম্পায়ারকে সম্মান জানাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে ক্ষোভ আর অপমানে ঘরোয়া ক্রিকেটের আম্পায়ারিংকে বিদায় বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সৈকত।
যার সূত্রপাত তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে। চলতি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আম্পায়ারদের সাথে তর্কে জড়িয়ে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হোন তাওহিদ হৃদয়। পরে সংবাদমাধ্যমে আম্পায়ারদের নিয়ে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করলে বাড়ে শাস্তির মেয়াদ। হৃদয়কে চারটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেয়ার পাশাপাশি আরো এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সবকিছু ঠিক ছিল। তবে হঠাৎ অদৃশ্য কিছুর ইশারায় কমে যায় শাস্তি, এক ম্যাচ পরেই মাঠে ফেরেন হৃদয়।
যার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, হৃদয়ের দল মোহামেডান শাস্তি কমানোর জন্য টেকনিক্যাল কমিটির কাছে আবেদন করে। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি টেকনিক্যাল কমিটি। কিন্তু তাদের উপেক্ষা করেই বিসিবির আম্পায়ারস বিভাগ নিষেধাজ্ঞা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ আম্পায়ারস বিভাগের এই এখতিয়ার নেই। শাস্তি কমাতে পারে শুধু সিসিডিএম ও টেকনিক্যাল কমিটি। তবুও খেলানো হয় হৃদয়কে।
জানা যায়, তার ৭ ডিমেরিট পয়েন্ট থেকে ৪টি ডিমেরিট পয়েন্ট মুছে দেয়া হয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদও হ্রাস পায়। এখানেই শেষ নয়, এই ঘটনায় বিসিবির কোড অব কনডাক্টে পরিবর্তন আনা হয়। পূর্বের নিয়মে ৪-৭ ডিমেরিট পয়েন্টে ২ ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নতুন নিয়মে তা কমিয়ে ১ ম্যাচ করা হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য স্তরেও নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কমানো হয়েছে।
এমতাবস্থায় অপমানিত বোধ করেন সৈকত। সূত্র বলছে, হৃদয়ের শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েই বিসিবির চাকরি ছেড়ে দিতে চাইছেন তিনি। নিজের সম্মান ও পেশাগত নৈতিকতার জায়গা থেকে সরে দাঁড়াতে চান সৈকত। অবশ্য এবারই প্রথম নন, এ ঘটনায় এর আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যাল কমিটির দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার এনামুল হক। যিনি কি না হৃদয়ের শাস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।
এদিকে তাদের চাকরি ছাড়তে চাওয়ার খবর বিসিবি পর্যন্ত পৌঁছেছে। বিষয়টা আলোচনায় চলে আসায় বিব্রত ক্রিকেট বোর্ড। জানা গেছে, আজ বুধবার এই নিয়ে একটি জরুরি সভা হওয়ার কথা রয়েছে।