পটুয়াখালীর গলাচিপায় সাংবাদিক আরেফিন লিমনকে হুমকি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজের ঘটনায় যুবদল কর্মী মেহেদী হাসান মুকুল প্যাদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি তাকে দলীয় পদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গলাচিপার চিকনিকান্দি এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে গলাচিপা থানা পুলিশ। মুকুল চিকনিকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির একজন প্রভাবশালী কর্মী এবং যুবদলের ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরেফিন লিমন অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কণ্ঠস্বর–এর গলাচিপা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে হিন্দু পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে অভিযুক্ত মুকুল প্যাদার বক্তব্য জানতে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সাংবাদিক আরেফিন লিমন ফোন করলে তিনি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরে ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এর আগের দিন সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে উপজেলার মাঝগ্রামের বাসিন্দা দিলীপ দেবনাথ গলাচিপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, মুকুল প্যাদা ও তার ভাই আরিফ হোসেন প্যাদা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন। সম্প্রতি তারা তার বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি থানায় আশ্রয় নেন।
স্থানীয় সাংবাদিকরা ওই রাতে দিলীপ দেবনাথ ও তার স্ত্রীর ভিডিও সাক্ষাৎকার নেন। সাক্ষাৎকারে দিলীপ জানান, প্রায় ছয় মাস আগে মুকুল প্যাদা তাকে রাস্তা আটকিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তাকে মারধর করে পা ভেঙে দেন। বিষয়টি থানায় জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপর থেকেই তিনি নিয়মিত ভয়ভীতির মধ্যে ছিলেন।
ওই সাক্ষাৎকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়। পরদিন সকালে সাংবাদিক লিমন আলোচিত ঘটনায় অভিযুক্ত মুকুলের বক্তব্য জানতে ফোন করলে তিনি উল্টো সাংবাদিককেই হুমকি দেন এবং ভিডিওটি ডিলিট না করলে গলাচিপায় সাংবাদিকতা করতে না দেওয়ার হুমকি দেন।
এদিকে বিষয়টি যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নজরে আসার পর মঙ্গলবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে মেহেদী হাসান মুকুল প্যাদাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন যুবদল কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন। বহিষ্কৃত ব্যক্তি দলের পরিচয় ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশাদুর রহমান সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, ‘হিন্দু পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো ও সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত মুকুল প্যাদাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’



















