বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১০ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন,
“দুঃখজনকভাবে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু গোষ্ঠী— যারা নিজেদের জুলাইয়ের আন্দোলনের অংশীদার মনে করে— তারাও আমার বাবাকে নিয়ে মিথ্যাচারে যুক্ত হয়েছে। মিথ্যা, গুজব ও অপবাদ সমাজকে ধ্বংস করে।”
দেশের ভবিষ্যৎ ও তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি লেখেন,
“জীবনের এই প্রান্তে এসে দেখি, সমাজে কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থে মিথ্যার চাষ করছে। এখন সত্য বলা জরুরি।”
নিজের বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন,
“আমার বাবা মরহুম মির্জা রুহুল আমিন ১৯৭১ সালের মার্চের ২৭ তারিখে আমার মা, দুই ভাই ও দুই বোনকে নিয়ে নানাবাড়িতে আশ্রয় নেন। এপ্রিল মাসে চলে যান ভারতের ইসলামপুরে রিফিউজি ক্যাম্পে, যেখানে যুদ্ধের প্রায় পুরোটা সময় কাটে। ৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও মুক্ত হওয়ার পর তিনি দেশে ফেরেন। ফিরে এসে দেখেন, সব লুট হয়ে গেছে। মা তাঁর গয়না বিক্রি করে সংসার চালান। আমি তখন অর্থনীতি শিক্ষকতায় যোগ দিই, আর প্রথম বেতন তুলে দিই মায়ের হাতে।”
তিনি আরও বলেন,
“১৯৭১-এর পর বাংলাদেশের কোটি মানুষ ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবন গড়ে তুলেছে। আমার বাবা ঠাকুরগাঁওয়ের আধুনিক উন্নয়নের অগ্রদূত ছিলেন। তাঁর জীবনে কোনো মামলা হয়নি। মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতি রক্ষায় স্থানীয় রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। ১৯৯৭ সালে তাঁর মৃত্যুতে সরকারিভাবে শোক প্রকাশও করা হয়।”
নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন,
“গত বছরের জুলাইয়ে আমাদের তরুণরা বাংলাদেশকে নতুন আশার আলো দেখিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, তারা মিথ্যার চাষ করবে না। তারা মেধা, সততা, নীতি ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। শঠতা আর মিথ্যা দিয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়, কিন্তু দেশ গড়া যায় না।”
শেষে তিনি কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে লেখেন,
“হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয় কোনো কোনো অনুমান তো পাপ।” (সূরা আল-হুজুরাত)
মির্জা ফখরুল আহ্বান জানান—
“আসুন, আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা, দেশপ্রেম ও নতুন প্রজন্মের সাহসিকতা দিয়ে তৈরি করি একটি সৎ, মর্যাদাপূর্ণ ও মানবিক বাংলাদেশ।”

























