ঢাকা ০৪:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ নিয়ে পুলিশের জন্য দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা, ক্ষুব্ধ পরিবার

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০১:১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৩৬ বার পড়া হয়েছে

 

রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলেও পুলিশের অনুপস্থিতিতে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষায় রাখা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর মরদেহ। পরে দায়সারা সম্মাননায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা।

 

বুধবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে মারা যান ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী। পরে বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও পরে সাড়ে ৪টায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করার কথা ছিল।

 

 

নির্ধারিত সময় বিকেল ৪টায় সম্মাননা জানানোর সময় পার হয়ে গেলেও পুলিশ সদস্য ও প্রশাসনের কেউ হাজির হয়নি। অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে মুসল্লিরা চলে যাওয়া শুরু করলে পরিবারের সিদ্ধান্তে বিকেল ৫টায় কাশুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউনুস আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

 

জানাজা শেষে মরদেহ দাফনের জন্য গোরস্তানে নেওয়া হলে সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান উল হক। তার অনুরোধে মুসল্লিরা ঘণ্টা খানেক অপেক্ষার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় হাজির হয় পুলিশ। এরপর মাগরিবের নামাজের পর দায়সারা রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানিয়ে ফেরত যাওয়ার সময় মুসল্লিদের তোপের মুখে পড়েন পুলিশ সদস্যরা।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর ভাই ইলিয়াস আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাই একজন বীর সন্তান। জীবিত অবস্থায় রাষ্ট্র তাকে সম্মানিত করেছে। কিন্তু মৃত্যুর পর তাকে সম্মান জানাতে অবহেলা। এটা পুরো পরিবারকে অপমান করা হয়েছে।’

 

ইউনুস আলীর একমাত্র ছেলে নুর হোসেন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘প্রশাসন জঘন্য কাজ করেছে। বাবার সম্মানকে হাজারো মানুষের কাছে হেয় করেছে। পুরো পরিবার আমরা লজ্জিত। অনেক মানুষ বাবাকে কটু কথা বলে চলে গেছে। এটার সুযোগ করে দিয়েছে পুলিশ।’

 

 

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজি ফাহিম উদ্দীন আহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক।’

 

 

জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান উল হক বলেন, ‘দূরের রাস্তা হওয়ার কারণে কিছু লেট হয়েছে।’

 

অন্যদিকে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি দুরুল হোদা বলেন, ‘সময়মতো পুলিশকে জানায়নি মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। তাই এমনটা হয়েছে। পুলিশ লাইন ঠাকুরগাঁও থেকে আসতে একটু সময় লাগবেই পুলিশ সদস্যদের।’

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান বলেন, ‘সময়মতো পুলিশকে জানানো হয়েছে। আগে স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যরা সম্মাননা জানাত। এখন ঠাকুরগাঁও থেকে আসছে। তাই একটু বিলম্ব হয়েছে।’

 

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ নিয়ে পুলিশের জন্য দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা, ক্ষুব্ধ পরিবার

মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ নিয়ে পুলিশের জন্য দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা, ক্ষুব্ধ পরিবার

আপডেট সময় ০১:১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

 

রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলেও পুলিশের অনুপস্থিতিতে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষায় রাখা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর মরদেহ। পরে দায়সারা সম্মাননায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা।

 

বুধবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে মারা যান ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী। পরে বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও পরে সাড়ে ৪টায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করার কথা ছিল।

 

 

নির্ধারিত সময় বিকেল ৪টায় সম্মাননা জানানোর সময় পার হয়ে গেলেও পুলিশ সদস্য ও প্রশাসনের কেউ হাজির হয়নি। অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে মুসল্লিরা চলে যাওয়া শুরু করলে পরিবারের সিদ্ধান্তে বিকেল ৫টায় কাশুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউনুস আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

 

জানাজা শেষে মরদেহ দাফনের জন্য গোরস্তানে নেওয়া হলে সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান উল হক। তার অনুরোধে মুসল্লিরা ঘণ্টা খানেক অপেক্ষার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় হাজির হয় পুলিশ। এরপর মাগরিবের নামাজের পর দায়সারা রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানিয়ে ফেরত যাওয়ার সময় মুসল্লিদের তোপের মুখে পড়েন পুলিশ সদস্যরা।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর ভাই ইলিয়াস আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাই একজন বীর সন্তান। জীবিত অবস্থায় রাষ্ট্র তাকে সম্মানিত করেছে। কিন্তু মৃত্যুর পর তাকে সম্মান জানাতে অবহেলা। এটা পুরো পরিবারকে অপমান করা হয়েছে।’

 

ইউনুস আলীর একমাত্র ছেলে নুর হোসেন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘প্রশাসন জঘন্য কাজ করেছে। বাবার সম্মানকে হাজারো মানুষের কাছে হেয় করেছে। পুরো পরিবার আমরা লজ্জিত। অনেক মানুষ বাবাকে কটু কথা বলে চলে গেছে। এটার সুযোগ করে দিয়েছে পুলিশ।’

 

 

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজি ফাহিম উদ্দীন আহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক।’

 

 

জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান উল হক বলেন, ‘দূরের রাস্তা হওয়ার কারণে কিছু লেট হয়েছে।’

 

অন্যদিকে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি দুরুল হোদা বলেন, ‘সময়মতো পুলিশকে জানায়নি মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। তাই এমনটা হয়েছে। পুলিশ লাইন ঠাকুরগাঁও থেকে আসতে একটু সময় লাগবেই পুলিশ সদস্যদের।’

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান বলেন, ‘সময়মতো পুলিশকে জানানো হয়েছে। আগে স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যরা সম্মাননা জানাত। এখন ঠাকুরগাঁও থেকে আসছে। তাই একটু বিলম্ব হয়েছে।’