এবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা ট্রাম্প সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াব, সমঝোতা করব কিন্তু ওদের চটানো যাবে না। ট্রাম্প সরকার তিন মাস সময় দিয়েছে, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় চাইব। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা গ্র্যাজুয়েশনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ব্যবসায়ীদের অনেক প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, ইউএস কমার্সসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ৭০ থেকে ৮০ জনের সঙ্গে আলাপ করেছি। একটি জিনিস মনে রাখতে হবে রেয়াত ও কর অব্যাহতির যুগ চলে গেছে। এখানে আমরা অনেক পেছনে আছি। আমাদের রাজস্ব বাড়াতে হবে, সরকারও চালাতে হবে, অন্যদিকে ব্যবসায়ীদেরও প্রণোদনা দিতে হবে। সেজন্য টাকার দরকার। কর দেওয়াটা করদাতার জন্য ব্যয় মনে করা হয়। কিন্তু আপনি কর দিলে তার বেনিফিট আপনিও পান। শিক্ষা, স্বাস্থ্য অন্যান্য সামাজিক সেবা পাওয়ার জন্য কর দিতে হবে।
তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যর জন্য বর্তমান সময়টা চ্যালেঞ্জ। আমরা চেষ্টা করছি সবাইকে নিয়ে দেশটা গড়ার। আমাদের উদ্দেশ্য মানুষের জীবন-জীবিকা সহজ করার। গালমন্দ খাচ্ছি, সেটা মেনে নিছি। আগামী বাজেটে চেষ্টা করবো সহানুভূতিশীল হওয়ার, আপনারাও সহানুভূতিশীল হবেন। উইন উইন সিচুয়েশান।
‘বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের ধারণা খুবই ভালো। সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশের কিছু মানুষের সমালোচনা। তখন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। গঠনমূলক সমালোচনা করুন। বিশ্যব্যাংক আমাদের সঙ্গে আছে, আইএমএফের সঙ্গে সমঝোতা চলছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, চেম্বার সদস্যদের উদ্দেশ্য বলতে চাই আমরা ট্রাম্প সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব, সমঝোতা করব কিন্তু ওদের চটানো যাবে না। শুল্কের বিষয়ে আমেরিকা সরকার তিন মাস সময় দিয়েছে, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় চাইব। আমরা ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করব।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী শিল্পে উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করার সুপারিশ করেন। ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব জানিয়ে তিনি বলেন, করমুক্ত আয়সীমা ১ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া নারী করদাতা ও ৬৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করা প্রস্তাব করেন তিনি।