সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শিশির মনির বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া কোনো রায় সরাসরি কার্যকর হয় না। কারণ সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ আইনেই সংরক্ষিত। আপিল ও রিভিউ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেই দণ্ড কার্যকরের বিষয়টি আসে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদ্ধতি নিয়ে দৈনিক যুগান্তর-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শিশির মনির বলেন, যেহেতু দুজনই আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি, তাই তারা আপিল করার এখতিয়ারও পাননি। আপিল করতে হলে জেলে থাকা বা বেল থাকা বাধ্যতামূলক। তবে তারা বাংলাদেশে ফিরে এসে আত্মসমর্পণ করলে আপিলের সুযোগ পাবেন। সেই আপিল নিষ্পত্তির পরই ফাঁসি কার্যকরের প্রসঙ্গ উঠতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই কেউ কেউ মনে করছেন এখনই দণ্ড কার্যকর করা সম্ভব। বাস্তবে আইন অনুসরণ ছাড়া কোনোভাবেই তা করা যায় না।
তাদের ফেরত আনার প্রসঙ্গে শিশির মনির বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি থাকলেও শেখ হাসিনা ভারতে বন্দি নন; তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন এবং ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টার তত্ত্বাবধানে অবস্থান করছেন। সেই কারণে তাকে বন্দি হিসেবে গণ্য করা যায় না।
বন্দি হতে হলে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে অনুরোধ পাঠাবে, ভারত তা গ্রহণ করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেপ্তার করবে, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করবে এবং জেলে পাঠাবে—তখনই তাকে ‘বন্দি’ বলা সম্ভব হবে। এরপরই বন্দি বিনিময়ের আলোচনার সুযোগ আসে।
তিনি আরও বলেন, বন্দি বিনিময় সফল করতে হলে শক্তিশালী কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং বিদেশের অভিজ্ঞ আইন ফার্ম নিয়োগ দুটোই জরুরি। যাকে ফেরত আনার চেষ্টা হবে, তিনিও নিজ দেশের আদালতে আইনি লড়াই করতে পারেন, তাই প্রক্রিয়াটি আরও জটিল।
সর্বশেষে শিশির মনির বলেন, পুরো বিষয়টিই আইনের কাঠামোর ভেতরে থেকে সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে।


























