চব্বিশের গণঅভ্যুত্থনে স্বৈরশাসক হাসিনার পতনের পর দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। গণহত্যার দায়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে প্রভাব হারিয়েছে, ফলে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হচ্ছে।
গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্রদের একটি অংশের উদ্যোগে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নানা অভ্যন্তরীণ বিরোধ, পদ নিয়ে কোন্দল ও সাংগঠনিক দুর্বলতায় কার্যত শক্তি হারাতে বসেছে। দলটির ভেতরে বিভাজনের আশঙ্কা রয়েছে, এবং যে কোনো সময়ই এনসিপি তিনভাগে বিভক্ত হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক দল না হলেও হেফাজতে ইসলাম দেশের রাজনীতিতে কিছু প্রভাব ধরে রেখেছে। বিএনপির মনোনয়ন পেতে পারে এমন আলোচনা থাকলেও বিদ্রোহী প্রার্থীর ঝুঁকি দেখিয়ে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন সংগঠনের একটি বড় অংশ। সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে এর ভেতরেও বিতর্ক বাড়ছে।
বাংলাদেশের ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবেই মাঠে রয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসকেও উল্লেখযোগ্য শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া ডজনখানেক ছোট দলকে নিয়ে একটি বৃহত্তর মোর্চা গঠনের চেষ্টা চলছে জামায়াতের নেতৃত্বে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। জোট গঠন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না এলেও ৭ দলকে সঙ্গে নিয়ে পাঁচ দফা দাবিতে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে আরও বেশ কিছু দলকে মোর্চায় যুক্ত করার পরিকল্পনাও জোরদার হয়েছে।
হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক দল না হলেও তাদের অনেক নেতা বিভিন্ন ইসলামিক রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকায় সংগঠনটি স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টাকে বিতর্কিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দেশের রাজনীতিতে দ্রুত পরিবর্তিত এই সমীকরণ আগামী নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।






















