আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণকারী ফয়সাল করিম মাসুদের আগের অস্ত্র মামলার জামিন সহজ হয়েছে প্রভাবশালী আইনজীবীদের কারণে। এসব আইনজীবীর অধিকাংশই বড় রাজনৈতিক দলের নেতা—এমন অভিযোগও তুলে ধরেছেন তিনি।
বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আসিফ নজরুল বলেন, ফয়সাল করিম মাসুদ গত বছর অস্ত্র মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিল। অথচ অস্ত্র মামলায় সাধারণত সহজে জামিন হওয়ার কথা নয়। প্রভাবশালী আইনজীবীরা জামিনের পক্ষে অবস্থান নিলেই এমনটা সম্ভব হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, হাইকোর্ট একটি স্বাধীন বিচারিক প্রতিষ্ঠান এবং এর সিদ্ধান্তের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো নিয়ন্ত্রণ বা সম্পৃক্ততা নেই। ফলে ফয়সালের জামিনের জন্য আইন মন্ত্রণালয় দায়ী নয়।
তবে উচ্চ আদালতে বিচারিক বিবেচনা কতটা অনুসরণ করা হয়—সে প্রশ্ন তোলার সুযোগ আছে বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, গত অক্টোবরে একটি হাইকোর্ট বেঞ্চে মাত্র চার ঘণ্টায় ৮০০ মামলায় জামিন দেওয়ার বিষয়টি তিনি প্রকাশ্যে প্রশ্ন করেছিলেন। ওই বক্তব্যের পর একশ্রেণির আইনজীবী তার পদত্যাগ পর্যন্ত দাবি করেছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, আইন অনুযায়ী জামিনের সুযোগ থাকলেও গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত, চিহ্নিত সন্ত্রাসী কিংবা জামিন পেলে পুনরায় অপরাধ করার আশঙ্কা রয়েছে—এমন ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া অস্বাভাবিক ও অসংগত। এ বিষয়ে তিনি প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানান।
নিম্ন আদালত থেকেও গত ১৬ মাসে কিছু জামিন হয়েছে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, অনেক মামলায় অভিযোগপত্রে আসামির অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য, এমনকি দলীয় পরিচয় পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়নি। তবুও যথাযথ বিচারিক বিবেচনা ছাড়াই জামিন দেওয়া হয়েছে—এ নিয়ে তিনি আগেও আপত্তি তুলেছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সবশেষে জামিন বাণিজ্যে জড়িতদের কঠোর বার্তা দিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “এবার থামুন। আমাদের ছেলেদের জীবন বিপন্ন করার মতো সিদ্ধান্ত দেবেন না। বিচারিক বিবেচনার বাইরে গিয়ে জামিন দিয়ে গণহত্যাকারী ও তাদের অনুসারীদের সুযোগ করে দিলে এর দায় আপনাদেরকেই নিতে হবে—ইহকাল ও পরকাল দু’জায়গাতেই।”


























