Home সারাদেশ পায়ুপথে বাতাস ঢোকানোর পর প্রাণ গেল শিশুর

পায়ুপথে বাতাস ঢোকানোর পর প্রাণ গেল শিশুর

এবার রাজধানীর মিরপুরে মোটরসাইকেল ওয়াশে ব্যবহৃত যন্ত্রের সাহায্যে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে চার বছরের শিশু আবুবক্কর সিদ্দিককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর বাউনিয়াবাদ এলাকায় হৃদয়বিদারক ও অমানবিক এই ঘটনায় নিহতের মা আয়শা বেগম পল্লবী থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। 

জানা গেছে, মামলায় রাজু (২০), সূজন (৩৬), এক কিশোর ও অজ্ঞাতপরিচয় একজনকে আসামি করা হয়েছে। জিহাদ বেড়িবাদ এলাকায় মো. রাতুল ও সূজনের বিসমিল্লাহ হোন্ডা গ্যারেজে কাজ করে। সে তার ১১ বছরের বড় ভাই জিহাদ ও মায়ের সঙ্গে মিরপুর বাউনিয়াবাদের পোড়াবস্তি এলাকায় থাকতো। শিশুটি ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স পরিচালিত ‘ফুলকলী-৭’ ইসিডি সেন্টারের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মা আয়শা বেগম একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। বাবা মো. জাবেদ বাসচালক। তবে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন না। 

মামলার এজাহার ও পরিবারের বর্ণনা মতে, ঘটনার দিন দুপুর ৩টার দিকে বড় ভাইয়ের সঙ্গে গ্যারেজে যায় আবুবক্কর। ওই সময় জিহাদকে রুটি-কলা আনতে পাঠিয়ে শিশু আবুবক্করের পায়ুপথে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করার পাইপ দিয়ে বাতাস ঢোকান অভিযুক্তরা। জিহাদ এসে দেখে তার ভাইয়ের পায়ুপথ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে, আর সে বমি করছে। জিহাদ উপস্থিত এক কিশোর, রাজু ও সূজনের কাছে জানতে চাইলে তারা ঘটনা স্বীকার করেন। 

তারা জানায়, আবুবক্কর নিজেই পায়ুপথে হাওয়ার মেশিন দিয়ে বাতাস ঢুকিয়েছে। এ সময় গ্যারেজের আরেক মালিক রাতুল উপস্থিত ছিলেন না। পরে জিহাদ বাড়িতে এসে ঘটনা সবাইকে জানালে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরা আবুবক্করকে প্রথমে মিরপুরে একটি ক্লিনিকে, পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়রা অভিযুক্ত কিশোরকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। অন্যরা পালিয়ে গেছে।

বুধবার সকালে শিশুটির মা আয়শা বেগম বলেন, দুই ছেলেকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছিলাম। আমার মা চঁন্দ্র বানু ও বড় ছেলে জিহাদের কাছে ছোট ছেলেকে রেখে কাজে যেতাম। আমার ছোট্ট ছেলেকে কী নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হলো, আমি এর বিচার চাই। 

এ ব্যাপারে নিহতের নানি চঁন্দ্র বানু বলেন, দুই ছেলেকে নিয়ে আমার মেয়ে অনেক কষ্ট করছে। ভিক্ষা করে পর্যন্ত ছেলেদের খাইয়েছে। সেই বুকের ধন আজ কোথায় গেল? এ বিষয়ে জানাতে চাইলে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কিশোরকে কোর্টে তোলা হয়েছে। শিশু বলে তার বিচার শিশু আইনের আওতায় হবে। অন্য আসামিরা পালাতক রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ওসি বলেন, প্রথামিক তদন্তে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযোগপত্র ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে। নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরা না থাকলেও আশপাশের সিসি ক্যামেরা থেকে সংশ্লিষ্ট কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এখন বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version