এবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার নারীদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ও সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে মতামত দিয়ে বলেন, মমতাজের মতো সংরক্ষিত নারী আসন প্রয়োজন নেই । তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত ১০০টি সরাসরি আসন থেকে নারীদের সংসদে আসার ব্যবস্থার পক্ষে জোরালো সমর্থন জানান। তার মতে, বর্তমান সংরক্ষিত নারী আসন পদ্ধতিতে প্রকৃত নারী ক্ষমতায়ন হয় না, বরং এটি একটি প্রতীকী ব্যবস্থা মাত্র। তিনি এই পদ্ধতিকে ‘অমুকের খালা, তমুকের নানী’ প্রবেশের পথ হিসেবে বর্ণনা করেন, যেখানে যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক যোগাযোগ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়।
সারোয়ার তুষার তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেন, নারীদের সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এতে করে প্রকৃত যোগ্য নারী প্রতিনিধিরা সংসদে আসতে পারবেন। তিনি যারা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে তাদেরকে ‘নারীশক্তি বিরোধী’ আখ্যা দেন এবং আগামী নির্বাচনে জনগণকে তাদের প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানান। তার মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী হওয়ায় তাদের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি।
সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে সারোয়ার তুষার একটি মৌলিক পরিবর্তনের প্রস্তাব করেন। তার দাবি, কোনো সংবিধান সংশোধনের আগে অবশ্যই গণভোট অনুষ্ঠিত করতে হবে। তিনি বর্তমান ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, কোনো দল ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েও আসন বণ্টনের জটিল পদ্ধতির মাধ্যমে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে। তিনি এটিকে ‘ম্যাজিক’ বলে অভিহিত করেন যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে।
সারোয়ার তুষার জোর দিয়ে বলেন, সংবিধান কেবল বিশেষজ্ঞদের বিষয় নয়, এটি জনগণের মৌলিক দলিল। তাই সংবিধান নিয়ে আলোচনা ও সংশোধনের ক্ষেত্রে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি যারা জনগণকে সংবিধান বুঝতে বা আলোচনায় অংশ নিতে বাধা দেয় তাদের কঠোর ভাষায় নিন্দা করেন। তার মতে, যারা জনগণের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে চায় বা নারীদের পিছনে টেনে রাখতে চায়, তাদের বাংলাদেশে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সারোয়ার তুষারের এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নারী অংশগ্রহণ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার একটি জোরালো দাবি হিসেবে দেখা যায়।