ইসলামী ছাত্র শিবির এবং নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উভয়পক্ষের নেতাদের পরস্পরবিরোধী মন্তব্য নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরেই মূলত এই দ্বন্দ্বের সূচনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় উভয় সংগঠনের মধ্যে নেতৃত্ব ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে প্রতিযোগিতা এখন স্পষ্ট।
শিবির নেতারা অভিযোগ করছেন, এনসিপি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের আক্রমণ করছে, যাতে আসন্ন নির্বাচনে নিজেরা রাজনৈতিক সুবিধা নিতে পারে। গত ৩ আগস্ট ঢাকায় এনসিপির সমাবেশে উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম হওয়াকে ঘিরেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শিবির ঘনিষ্ঠরা দাবি করছেন, তারা লোকবল দেয়নি বলেই এনসিপির সমাবেশ ছিল দুর্বল।
অন্যদিকে, এনসিপির শীর্ষ নেতারা এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটি রাজনৈতিক হীন প্রচারণা। তারা দাবি করেন, আন্দোলন পরবর্তী পরিস্থিতিতে যাদের ভূমিকা ছিল প্রকট, তাদের দুর্বল দেখাতেই এই প্রচারণা।
এই বিরোধ প্রকাশ্যে আসে মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ঠিক আগে যেসব নেতা নেতৃত্বে ছিলেন, তাদের মধ্যে শিবির-ঘনিষ্ঠ সাদিক কায়েম এবং এনসিপি ঘনিষ্ঠ নাহিদ ইসলামের নাম উঠে আসে।
আন্দোলনের শেষ দিকে সাদিক কায়েমকে এনসিপি নেতাদের সঙ্গে দেখা গেলেও কিছুদিন পরই তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। এরপর থেকেই শুরু হয় ‘কে কতোটা ভূমিকা রেখেছেন’ তা নিয়ে বিতর্ক এবং একে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে উত্তপ্ত প্রচার।