ঢাকা ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গলব্লাডার অপারেশনে অবহেলা, ৫ দিন আইসিউতে থাকার পর মারা গেল রোগী বিচার চায় স্বজনরা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৩১ বার পড়া হয়েছে

ঠাকুরগাঁওয়ের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মাম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গোলব্লাডার অপারেশনে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

অপারেশনের জন্য অজ্ঞান করার পর টানা ৫ দিন আইসিইউতে রাখলেও জ্ঞান না ফেরায় খয়রুল ইসলাম (৫০) নামের রোগীটি মারা গেছে।

এ ঘটনায় জেলা শহরের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। রোগীর স্বজনদের দাবি সুস্থ্য রোগীকে নিয়ে অপারেশন করাতে গিয়ে লাশ নিয়ে ফিরতে হয়েছে। এই ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন তারা।

বুধবার (২৭ আগস্ট) ভোররাতে দিনাজপুরে মেডিকেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যান খয়রুল।

খয়রুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের পাইকপারা এলাকার বাসিন্দা।

রোগীর স্বজনরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের মাম হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকে ভর্তি করান গোলব্লাডার অপারেশনের জন্য। চুক্তি সম্পাদন করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ডাঃ রুহুল কুদ্দুসসের কাছে গলব্লাডারের অপারেশন করেন। অপারেশনের পর ৯ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ ওটি রুমেই রাখেন রোগীকে। এতে ক্ষুদ্ধ হয় স্বজনরা।

পরে ওই রোগির বিষয়ে স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব চাইতে গেলে কৌশলে তাদের লোকজনসহ স্বজনদের দিনাজপুর মেডিকেলে রোগীকে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেও জ্ঞান না ফেরায় ৫ দিন আইসিইউতে থাকার পর বুধবার ভোররাতে মারা যায়।

রোগীর মেয়ে খুরশিদা জাহান খুশবু অভিযোগ করে জানান, গলব্লাডার অপারেশন করতে সময় লাগে ২০-২৫ মিনিট। আমার বাবার সময় লেগেছে ঘন্টার উপর। এরপরে আর জ্ঞান ফিরেনি। পরেরদিন সকালবেলা পর্যন্ত বাবার জ্ঞান না ফেরায় একাধিকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করার পরও তারা কোনকিছু হয়নি বলে এড়িয়ে গেছে। ঘুমের ঔষধ বেশি হয়ে গেছে বলে তাদের শান্তনা দেওয়া হয়।

খুশবু আরও অভিযোগ করেন, চিকিৎসক ও হাসপতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের ছাড়বো না।

রোগীর প্রতিবেশীরা জানান, সুস্থ্য একটা মানুষকে অপচিকিৎসার কারণে মৃত্যুরবরণ করতে হয়েছে। এটা এক ধরনের হত্যার শামিল। বেসরকারি হাসপাতালগুলো টাকা কামানোর ধান্দায় ব্যস্ত থাকে, রোগীর কি হলো সেদিকে মোটেও নজর রাখে। এসব অপচিকিৎসার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান রোগীর স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

মাম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার সফিউল আলম ভুট্টু বলেন, অপারেশনের পর রোগীর পরবর্তী অবস্থা সন্তোষজনক ছিল না। চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর এখানে আইসিইউ সুবিধা না থাকায় দিনাজপুর মেডিকেলে রেফার্ড করে। রোগীর চিকিৎসার তাদের কোন অবহেলা ছিল না বলে দাবি করেন ম্যানেজার। তবে রোগী পুরোপুরি সুস্থ্য হওয়ার কথা কিন্তু মারা যাবে ভাবেন নি বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য সেবার শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডাঃ আনিছুর রহমান জানান, বিষয়টি শুনেছি। সত্যতা যাচাইয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে। পরবর্ততিতে করণীয় জনানো যাবে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতীয় বর্ষণ ও বাঁধের পানি ছাড়ের কারণে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে বন্যা সতর্কতা

গলব্লাডার অপারেশনে অবহেলা, ৫ দিন আইসিউতে থাকার পর মারা গেল রোগী বিচার চায় স্বজনরা

আপডেট সময় ০৯:১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মাম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গোলব্লাডার অপারেশনে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

অপারেশনের জন্য অজ্ঞান করার পর টানা ৫ দিন আইসিইউতে রাখলেও জ্ঞান না ফেরায় খয়রুল ইসলাম (৫০) নামের রোগীটি মারা গেছে।

এ ঘটনায় জেলা শহরের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। রোগীর স্বজনদের দাবি সুস্থ্য রোগীকে নিয়ে অপারেশন করাতে গিয়ে লাশ নিয়ে ফিরতে হয়েছে। এই ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন তারা।

বুধবার (২৭ আগস্ট) ভোররাতে দিনাজপুরে মেডিকেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যান খয়রুল।

খয়রুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের পাইকপারা এলাকার বাসিন্দা।

রোগীর স্বজনরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের মাম হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকে ভর্তি করান গোলব্লাডার অপারেশনের জন্য। চুক্তি সম্পাদন করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ডাঃ রুহুল কুদ্দুসসের কাছে গলব্লাডারের অপারেশন করেন। অপারেশনের পর ৯ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ ওটি রুমেই রাখেন রোগীকে। এতে ক্ষুদ্ধ হয় স্বজনরা।

পরে ওই রোগির বিষয়ে স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব চাইতে গেলে কৌশলে তাদের লোকজনসহ স্বজনদের দিনাজপুর মেডিকেলে রোগীকে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেও জ্ঞান না ফেরায় ৫ দিন আইসিইউতে থাকার পর বুধবার ভোররাতে মারা যায়।

রোগীর মেয়ে খুরশিদা জাহান খুশবু অভিযোগ করে জানান, গলব্লাডার অপারেশন করতে সময় লাগে ২০-২৫ মিনিট। আমার বাবার সময় লেগেছে ঘন্টার উপর। এরপরে আর জ্ঞান ফিরেনি। পরেরদিন সকালবেলা পর্যন্ত বাবার জ্ঞান না ফেরায় একাধিকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করার পরও তারা কোনকিছু হয়নি বলে এড়িয়ে গেছে। ঘুমের ঔষধ বেশি হয়ে গেছে বলে তাদের শান্তনা দেওয়া হয়।

খুশবু আরও অভিযোগ করেন, চিকিৎসক ও হাসপতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের ছাড়বো না।

রোগীর প্রতিবেশীরা জানান, সুস্থ্য একটা মানুষকে অপচিকিৎসার কারণে মৃত্যুরবরণ করতে হয়েছে। এটা এক ধরনের হত্যার শামিল। বেসরকারি হাসপাতালগুলো টাকা কামানোর ধান্দায় ব্যস্ত থাকে, রোগীর কি হলো সেদিকে মোটেও নজর রাখে। এসব অপচিকিৎসার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান রোগীর স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

মাম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার সফিউল আলম ভুট্টু বলেন, অপারেশনের পর রোগীর পরবর্তী অবস্থা সন্তোষজনক ছিল না। চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর এখানে আইসিইউ সুবিধা না থাকায় দিনাজপুর মেডিকেলে রেফার্ড করে। রোগীর চিকিৎসার তাদের কোন অবহেলা ছিল না বলে দাবি করেন ম্যানেজার। তবে রোগী পুরোপুরি সুস্থ্য হওয়ার কথা কিন্তু মারা যাবে ভাবেন নি বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য সেবার শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডাঃ আনিছুর রহমান জানান, বিষয়টি শুনেছি। সত্যতা যাচাইয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে। পরবর্ততিতে করণীয় জনানো যাবে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।