ঢাকা ০৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাঙ্গাবালীতে ‘ডেভিলহান্টের’ ভয়ে স্কুলে না এসেও বেতন তুলছেন নৈশপ্রহরী, প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নেই চলছে অনিয়ম

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:২০:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • ৬১২ বার পড়া হয়েছে

নয়ন ইসলাম মানজার, পটুয়াখালী প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় চতলাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাঞ্চল্যকর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে যাচ্ছেন মো. সোহাগ ভূঁইয়া নামের এক নৈশপ্রহরী। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ডেভিলহান্ট’-এর ভয়ে তিনি বিদ্যালয়ে আসছেন না।

রাঙ্গাবালীর ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের এই বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী সোহাগ ভূঁইয়া গত ৫ আগস্ট থেকে নিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন না। অথচ প্রধান শিক্ষক মো. ওবাইদুল ইসলাম কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতেই তার বেতন-ভাতা নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে।

বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, দপ্তরির অনুপস্থিতির কারণে সহকারী শিক্ষিকা জাহানারা আলো দপ্তরি সংক্রান্ত কাজ করছেন। এমনকি তিনি অতিথিদের জন্য চা-বিস্কুটও পরিবেশন করছেন, যার ফলে শিক্ষাদানের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে সোহাগ ভূঁইয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ঘনিষ্ঠ সোহাগ, চাকরির পাশাপাশি দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। চাকরি নেয়ার পর থেকেই তিনি অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

বিদ্যালয়ের জমিদাতা আব্দুল জলিল খলিফা বলেন, “প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ে না গিয়ে নিয়মিত বেতন তুলছেন সোহাগ।”
অন্য একজন জমিদাতা খালেক ফরাজী অভিযোগ করে বলেন, “সাবেক সভাপতি আব্দুল মন্নানের বিশ্বস্ততা কাজে লাগিয়ে চাকরি নিয়েছেন সোহাগ। এরপর থেকেই এলাকার অসহায় মানুষকে নানা অনুদান দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।”

প্রধান শিক্ষক মো. ওবাইদুল ইসলাম বলেন, “সোহাগ রাজনৈতিক কারণে বিদ্যালয়ে আসতে পারেনি। সে মেডিকেল ছুটিতে রয়েছে।” তবে ছুটির লিখিত প্রমাণ চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি। এমনকি হাজিরা খাতাও প্রদর্শন করতে পারেননি, বরং জানান হাজিরা খাতা নৈশপ্রহরীর কাছেই থাকে।

অভিযোগের বিষয়ে সোহাগ ভূঁইয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিষ ঘোষ বলেন, “নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব ও নিয়োগ প্রদান করেন প্রধান শিক্ষক। তার দেওয়া প্রত্যয়নের ভিত্তিতে আমরা বেতন দিই। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, অনিয়ম তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে বিএনপির নতুন কর্মসূচি

রাঙ্গাবালীতে ‘ডেভিলহান্টের’ ভয়ে স্কুলে না এসেও বেতন তুলছেন নৈশপ্রহরী, প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নেই চলছে অনিয়ম

আপডেট সময় ১১:২০:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

নয়ন ইসলাম মানজার, পটুয়াখালী প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় চতলাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাঞ্চল্যকর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলে যাচ্ছেন মো. সোহাগ ভূঁইয়া নামের এক নৈশপ্রহরী। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ডেভিলহান্ট’-এর ভয়ে তিনি বিদ্যালয়ে আসছেন না।

রাঙ্গাবালীর ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের এই বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী সোহাগ ভূঁইয়া গত ৫ আগস্ট থেকে নিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন না। অথচ প্রধান শিক্ষক মো. ওবাইদুল ইসলাম কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতেই তার বেতন-ভাতা নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে।

বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, দপ্তরির অনুপস্থিতির কারণে সহকারী শিক্ষিকা জাহানারা আলো দপ্তরি সংক্রান্ত কাজ করছেন। এমনকি তিনি অতিথিদের জন্য চা-বিস্কুটও পরিবেশন করছেন, যার ফলে শিক্ষাদানের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে সোহাগ ভূঁইয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ঘনিষ্ঠ সোহাগ, চাকরির পাশাপাশি দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। চাকরি নেয়ার পর থেকেই তিনি অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

বিদ্যালয়ের জমিদাতা আব্দুল জলিল খলিফা বলেন, “প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ে না গিয়ে নিয়মিত বেতন তুলছেন সোহাগ।”
অন্য একজন জমিদাতা খালেক ফরাজী অভিযোগ করে বলেন, “সাবেক সভাপতি আব্দুল মন্নানের বিশ্বস্ততা কাজে লাগিয়ে চাকরি নিয়েছেন সোহাগ। এরপর থেকেই এলাকার অসহায় মানুষকে নানা অনুদান দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।”

প্রধান শিক্ষক মো. ওবাইদুল ইসলাম বলেন, “সোহাগ রাজনৈতিক কারণে বিদ্যালয়ে আসতে পারেনি। সে মেডিকেল ছুটিতে রয়েছে।” তবে ছুটির লিখিত প্রমাণ চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি। এমনকি হাজিরা খাতাও প্রদর্শন করতে পারেননি, বরং জানান হাজিরা খাতা নৈশপ্রহরীর কাছেই থাকে।

অভিযোগের বিষয়ে সোহাগ ভূঁইয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিষ ঘোষ বলেন, “নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব ও নিয়োগ প্রদান করেন প্রধান শিক্ষক। তার দেওয়া প্রত্যয়নের ভিত্তিতে আমরা বেতন দিই। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, অনিয়ম তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।