ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোহাম্মদ সাকিব। তার ব্যালট নম্বর ১৪। তাকে সমর্থন জানিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন সহপাঠী হাসনাত।
হাসনাত বলেন, সাকিবের প্রার্থী হওয়া মোটেও অপ্রত্যাশিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় এবং দেশের স্বার্থে তার দীর্ঘ সংগ্রামের পথকে তিনি ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই সাকিবকে ব্যতিক্রমী করে তুলেছিল তার স্বার্থহীন মনোভাব। ভর্তি কোচিংয়ে তার ছাত্র ছিলেন হাসনাত। ২০২১ সালে ভর্তি হওয়ার পরপরই সাকিব আর্থিক সংকটে থাকা সহপাঠীদের ভর্তি করাতে উদ্যোগ নেন। কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে তহবিল গড়ে অনেক শিক্ষার্থীকে সহায়তা করেন তিনি। এই মানবিক উদ্যোগেই প্রথম সাকিব সম্পর্কে গভীর আগ্রহ তৈরি হয়।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই রেজিস্ট্রার বিল্ডিং সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে “চব্বিশের অভ্যুত্থান” পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলনে সাকিবকে সম্মুখভাগে দেখা গেছে। বিশেষ করে ২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সে শ্লোগান তোলে: “এক দফা এক দাবি, হাসিনা তুই কবে যাবি।” বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় সংকটে বুক পেতে দাঁড়ানোই তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সাকিব সক্রিয়। ফিলিস্তিনে গণহত্যা, রোহিঙ্গা নিপীড়ন কিংবা ভারতের আধিপত্যবাদ—সব ইস্যুতেই তার অবস্থান স্পষ্ট। বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী এবং বিদেশি শিক্ষার্থীরা তার নির্বাচনী প্রচারণায় সমর্থন জানিয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সভা ও সেমিনারে অংশ নিয়ে সাকিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
ক্যাম্পাসে “পূর্বাপর” নামে একটি সংগঠন গড়ে সাকিব ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছে, নিয়মিত পাঠচক্র আয়োজন করেছে এবং “ক্লিন ডিইউ” ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস গঠনে অবদান রেখেছে।
হাসনাতের ভাষায়, “ডাকসু নির্বাচনে সাকিব জিতুক কিংবা হারুক—সে দমে যাওয়ার নয়। তার এই পথচলা একদিন আরও দূর গিয়ে আমাদের গর্বের অধ্যায় হয়ে উঠবে।”