দেশের কিংবদন্তি লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শিল্পীর বড় ছেলে ইমাম নিমেরি উপল গণমাধ্যমকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন ফরিদা পারভীন। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের পাশাপাশি শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। পরবর্তীতে আইসিইউতে নেয়া হয় এবং শেষ সময়ে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। সর্বশেষ একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা চালানো হলেও শেষ পর্যন্ত জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে পরাজিত হন এই বরেণ্য শিল্পী।
তার মৃত্যুতে শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্কৃতি অঙ্গনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় থেকেই তার শারীরিক খোঁজখবর রাখছিলেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সঙ্গীত জীবনের শুরু ও অবদান
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত গেয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন ফরিদা পারভীন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালনসংগীতে তালিম নেন এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লালনসংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি।
শিশুদের লালনসংগীত শিক্ষা দিতে তিনি গড়ে তোলেন ‘অচিন পাখি স্কুল’, যা নতুন প্রজন্মকে ঐতিহ্যের ধারায় যুক্ত করার এক অনন্য উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত।
স্বীকৃতি
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান। এছাড়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।
পারিবারিক সিদ্ধান্ত
শিল্পীর ছেলে জানিয়েছেন, জানাজা ও দাফনের বিষয়ে পারিবারিকভাবে আলোচনা চলছে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে।