ঢাকা ০২:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নন্দীগ্রামে আগাম জাতের আমন ধানে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৬:১৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ৫৬৭ বার পড়া হয়েছে
মামুন আহমেদ, (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। অল্প সময়ে ঘরে তোলা যায় বলে এ ধান চাষ এখন কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কাটার পর একই জমিতে আলু, সরিষা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে অতিরিক্ত আয় করার আশা করছেন তারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নন্দীগ্রামের নামুইট, বদলাষনসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন মাঠজুড়ে পাকা ধানের সোনালি রঙের সমারোহ। যতদূর চোখ যায়, শুধু পাকা ধানের ঝলমলে শীষ। কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষেরা ধান কাটা-মাড়াই ও ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এর চেয়েও বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কৃষকরা আগাম জাতের ধান আবাদ করেছেন। এসব ধানের ফলনও আশানুরূপ। কৃষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় এ বছর আগাম জাতের ধানে বাম্পার ফলন হচ্ছে। বাদলাষন গ্রামের কৃষক জামিল হোসেন বলেন, “আগাম ২ বিঘা জমিতে ব্রি-৭৫ জাতের ধান চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। এখন জমি তৈরি করে সরিষা আবাদ করব।” আগাম জাতের ধান কাটা শেষ করে কৃষকরা এখন আলু, সরিষা ও পেঁয়াজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফলে এক মৌসুমে একাধিক ফসল ফলিয়ে বাড়তি লাভের আশা করছেন তারা। কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর, সরিষা ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর, পেঁয়াজ ৪৫ হেক্টর, এবং সবজি ২৮০ হেক্টর জমিতে। এই মৌসুমে ৩ হাজার ৮৭০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজসহায়তা দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা সরিষা, গম, মসুর, খেসারি ও শীতকালীন সবজি চাষে উৎসাহিত হন। ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ধান কাটা ও নবান্ন উৎসবকে ঘিরে কৃষক পরিবার ও গ্রামীণ নারীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। নতুন ধানের চাল দিয়ে ক্ষীর-পায়েস, পিঠা-পুলি বানিয়ে অতিথি আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে নন্দীগ্রামে পালিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব। কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগাম জাতের ধান বাজারে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন এবং পরবর্তী মৌসুমের ফসল উৎপাদনে নতুন উদ্দীপনা পাচ্ছেন।
 ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, “কৃষকরা কৃষি অফিসের নিয়ম মেনে ধান রোপণ করায় ভালো ফলন পেয়েছেন।”
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজিউল হক বলেন, “আমরা কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছি। সার, বীজ ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ এ বছর রোগবালাই প্রায় ছিল না, আর ফলনও ভালো।” তাই কৃষকরা আগাম জাতের ধান বাজার বিক্রয় করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

মহানবী (সা.)-এর পছন্দের কিছু খাবার

নন্দীগ্রামে আগাম জাতের আমন ধানে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

আপডেট সময় ০৬:১৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
মামুন আহমেদ, (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। অল্প সময়ে ঘরে তোলা যায় বলে এ ধান চাষ এখন কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কাটার পর একই জমিতে আলু, সরিষা, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে অতিরিক্ত আয় করার আশা করছেন তারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নন্দীগ্রামের নামুইট, বদলাষনসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন মাঠজুড়ে পাকা ধানের সোনালি রঙের সমারোহ। যতদূর চোখ যায়, শুধু পাকা ধানের ঝলমলে শীষ। কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষেরা ধান কাটা-মাড়াই ও ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এর চেয়েও বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কৃষকরা আগাম জাতের ধান আবাদ করেছেন। এসব ধানের ফলনও আশানুরূপ। কৃষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় এ বছর আগাম জাতের ধানে বাম্পার ফলন হচ্ছে। বাদলাষন গ্রামের কৃষক জামিল হোসেন বলেন, “আগাম ২ বিঘা জমিতে ব্রি-৭৫ জাতের ধান চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। এখন জমি তৈরি করে সরিষা আবাদ করব।” আগাম জাতের ধান কাটা শেষ করে কৃষকরা এখন আলু, সরিষা ও পেঁয়াজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফলে এক মৌসুমে একাধিক ফসল ফলিয়ে বাড়তি লাভের আশা করছেন তারা। কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর, সরিষা ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর, পেঁয়াজ ৪৫ হেক্টর, এবং সবজি ২৮০ হেক্টর জমিতে। এই মৌসুমে ৩ হাজার ৮৭০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজসহায়তা দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা সরিষা, গম, মসুর, খেসারি ও শীতকালীন সবজি চাষে উৎসাহিত হন। ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ধান কাটা ও নবান্ন উৎসবকে ঘিরে কৃষক পরিবার ও গ্রামীণ নারীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। নতুন ধানের চাল দিয়ে ক্ষীর-পায়েস, পিঠা-পুলি বানিয়ে অতিথি আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে নন্দীগ্রামে পালিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব। কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগাম জাতের ধান বাজারে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন এবং পরবর্তী মৌসুমের ফসল উৎপাদনে নতুন উদ্দীপনা পাচ্ছেন।
 ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, “কৃষকরা কৃষি অফিসের নিয়ম মেনে ধান রোপণ করায় ভালো ফলন পেয়েছেন।”
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজিউল হক বলেন, “আমরা কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছি। সার, বীজ ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ এ বছর রোগবালাই প্রায় ছিল না, আর ফলনও ভালো।” তাই কৃষকরা আগাম জাতের ধান বাজার বিক্রয় করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।