ঢাকা ০৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ‘ম্যাসাকার’ পরিকল্পনা: নিষিদ্ধ সংগঠনের নড়াচড়া নিয়ে গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:১৫:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫১৪ বার পড়া হয়েছে

 

দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে লক্ষ্য করে বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে নিষিদ্ধ যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অংশবিশেষ— এমন তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৩ নভেম্বর ঢাকায় ঘোষিত তথাকথিত লকডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা ও মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সংঘর্ষ ও অরাজকতা সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।

বিশেষভাবে টার্গেট করা হয়েছে চৌদ্দগ্রাম, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, আলেখারচর ও চান্দিনা এলাকা। এসব স্থানে সমন্বিতভাবে মিছিল, রাস্তা অবরোধ ও হামলার পরিকল্পনার তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে।

এছাড়া ত্রিপুরা সীমান্ত হয়ে দেশে আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক ঢোকাচ্ছে আওয়ামী লীগ-সম্পৃক্ত এক সিন্ডিকেট, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিজিবির সাম্প্রতিক অভিযানে মাদকের সঙ্গে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকে নতুন নিরাপত্তা উদ্বেগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিজিবির এক অধিনায়ক বলেন,

“এই প্রথম মাদকের সঙ্গে অস্ত্র ঢুকছে বাংলাদেশে। অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একটি সংগঠিত সিন্ডিকেট এসব পাচার করছে বলে ধারণা করছি।”

সম্প্রতি দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিনহাদুল হাসান রাফি ও সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল পিয়াসের নেতৃত্বে গত ছয় মাসে অন্তত দশবার ঝটিকা মিছিলের ঘটনা ঘটেছে মহাসড়কে। পুলিশ রাফিকে গ্রেপ্তার করলেও ইসরাফিল এখনও পলাতক। তার বাবা মোকাম ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মাসুদ এসব কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেছেন বলে জানা গেছে।

গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগপন্থি নেতারা ত্রিপুরা রাজ্যে একত্রিত হয়ে অনলাইনে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে সক্রিয় হয়েছেন। সেখানে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ক্যাডার, যাদের অনেকের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, পতিত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও নেতাদের নেতৃত্বেই গোপনে সংগঠিত হচ্ছে এই তৎপরতা। নাম উঠে এসেছে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচির।

তাদের লক্ষ্য— কুমিল্লা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ‘ম্যাসাকার’ ঘটিয়ে রাজধানী ঢাকাকে অচল করে দেওয়া।

এদিকে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতারা দাবি করছেন, ছয় উপজেলার ওসিদের উদাসীনতার কারণেই মহাসড়কের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরোনো আওয়ামী ক্যাডারদের কিছু অংশ আবারও মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ সুযোগ বুঝে বিরোধী রাজনীতিতেও ঢুকে পড়ছে, যা ভবিষ্যৎ সহিংসতার ইঙ্গিত হতে পারে।


 

জনপ্রিয় সংবাদ

পুরান ঢাকায় দিনের বেলায় গুলিতে নিহত ১ : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় চাঞ্চল্য

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ‘ম্যাসাকার’ পরিকল্পনা: নিষিদ্ধ সংগঠনের নড়াচড়া নিয়ে গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তা

আপডেট সময় ১১:১৫:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

 

দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে লক্ষ্য করে বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে নিষিদ্ধ যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অংশবিশেষ— এমন তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৩ নভেম্বর ঢাকায় ঘোষিত তথাকথিত লকডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা ও মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সংঘর্ষ ও অরাজকতা সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।

বিশেষভাবে টার্গেট করা হয়েছে চৌদ্দগ্রাম, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, আলেখারচর ও চান্দিনা এলাকা। এসব স্থানে সমন্বিতভাবে মিছিল, রাস্তা অবরোধ ও হামলার পরিকল্পনার তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে।

এছাড়া ত্রিপুরা সীমান্ত হয়ে দেশে আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক ঢোকাচ্ছে আওয়ামী লীগ-সম্পৃক্ত এক সিন্ডিকেট, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিজিবির সাম্প্রতিক অভিযানে মাদকের সঙ্গে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকে নতুন নিরাপত্তা উদ্বেগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিজিবির এক অধিনায়ক বলেন,

“এই প্রথম মাদকের সঙ্গে অস্ত্র ঢুকছে বাংলাদেশে। অরাজকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একটি সংগঠিত সিন্ডিকেট এসব পাচার করছে বলে ধারণা করছি।”

সম্প্রতি দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিনহাদুল হাসান রাফি ও সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল পিয়াসের নেতৃত্বে গত ছয় মাসে অন্তত দশবার ঝটিকা মিছিলের ঘটনা ঘটেছে মহাসড়কে। পুলিশ রাফিকে গ্রেপ্তার করলেও ইসরাফিল এখনও পলাতক। তার বাবা মোকাম ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মাসুদ এসব কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেছেন বলে জানা গেছে।

গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগপন্থি নেতারা ত্রিপুরা রাজ্যে একত্রিত হয়ে অনলাইনে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে সক্রিয় হয়েছেন। সেখানে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ক্যাডার, যাদের অনেকের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, পতিত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও নেতাদের নেতৃত্বেই গোপনে সংগঠিত হচ্ছে এই তৎপরতা। নাম উঠে এসেছে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচির।

তাদের লক্ষ্য— কুমিল্লা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ‘ম্যাসাকার’ ঘটিয়ে রাজধানী ঢাকাকে অচল করে দেওয়া।

এদিকে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতারা দাবি করছেন, ছয় উপজেলার ওসিদের উদাসীনতার কারণেই মহাসড়কের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরোনো আওয়ামী ক্যাডারদের কিছু অংশ আবারও মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ সুযোগ বুঝে বিরোধী রাজনীতিতেও ঢুকে পড়ছে, যা ভবিষ্যৎ সহিংসতার ইঙ্গিত হতে পারে।