ঢাকা ০২:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে সাবেক শাসকদের মৃত্যুদণ্ড: ভুট্টো–মোশাররফ থেকে সাদ্দাম পর্যন্ত বিচার-ইতিহাস

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৫:০৬:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৩৭ বার পড়া হয়েছে

 

দক্ষিণ এশিয়ায় শেখ হাসিনার আগেও দুই সাবেক রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছিল। তাদের একজনের রায় কার্যকর হয়। আর মধ্যপ্রাচ্যে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবচেয়ে আলোচিত মৃত্যুদণ্ড ছিল ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের।

উপমহাদেশে শেখ হাসিনার আগে যাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছিল, তারা দুজনই পাকিস্তানের সাবেক শাসক—জুলফিকার আলী ভুট্টো ও পারভেজ মোশাররফ। দুটি রায় আসে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যার অভিযোগ এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায়।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী (১৯৭৩–৭৭) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭৭ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন। সেনাপ্রধান জিয়াউল হকের শাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যার অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন সুপ্রিম কোর্ট।
১৯৭৯ সালের ৪ এপ্রিল রাওয়ালপিন্ডি কারাগারে ভুট্টোর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। প্রায় ৪৪ বছর পর ২০২৩ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জানায়—ভুট্টোর বিচার ন্যায্য ছিল না।

২০১৯ সালে পাকিস্তানের ইতিহাসে দ্বিতীয় সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের রায় পান আরেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি করে সংবিধান স্থগিতের অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় এই রায় দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে পদত্যাগের পর মোশাররফ দেশ ছাড়েন এবং ২০১৬ সালে চিকিৎসার জন্য দুবাই যান। সেখানেই ২০২৩ সালে তাঁর মৃত্যু হয়; রায় কার্যকর হয়নি।

ঈদের সকালে সাদ্দামের ফাঁসি
২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর—ঈদুল আজহার সকালে—মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের। ১৯৭৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ইরাক শাসন করেন। শাসনামলে দুজাইল শহরে শিয়াদের হত্যা, হালাবজায় রাসায়নিক হামলাসহ গণহত্যার অভিযোগে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়।

২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ইরাকে হামলা চালানোর পর ২০০৪ সালের জুনে সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৫ সালের অক্টোবর থেকে বিচার শুরু হয়ে ২০০৬ সালের নভেম্বরে রায় ঘোষণা হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যেই তা কার্যকর করা হয়।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, সিএনএন, ব্রিটানিকা

জনপ্রিয় সংবাদ

দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে সাবেক শাসকদের মৃত্যুদণ্ড: ভুট্টো–মোশাররফ থেকে সাদ্দাম পর্যন্ত বিচার-ইতিহাস

আপডেট সময় ০৫:০৬:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

 

দক্ষিণ এশিয়ায় শেখ হাসিনার আগেও দুই সাবেক রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছিল। তাদের একজনের রায় কার্যকর হয়। আর মধ্যপ্রাচ্যে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবচেয়ে আলোচিত মৃত্যুদণ্ড ছিল ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের।

উপমহাদেশে শেখ হাসিনার আগে যাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছিল, তারা দুজনই পাকিস্তানের সাবেক শাসক—জুলফিকার আলী ভুট্টো ও পারভেজ মোশাররফ। দুটি রায় আসে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যার অভিযোগ এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায়।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী (১৯৭৩–৭৭) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭৭ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন। সেনাপ্রধান জিয়াউল হকের শাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যার অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেন সুপ্রিম কোর্ট।
১৯৭৯ সালের ৪ এপ্রিল রাওয়ালপিন্ডি কারাগারে ভুট্টোর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। প্রায় ৪৪ বছর পর ২০২৩ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জানায়—ভুট্টোর বিচার ন্যায্য ছিল না।

২০১৯ সালে পাকিস্তানের ইতিহাসে দ্বিতীয় সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের রায় পান আরেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি করে সংবিধান স্থগিতের অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় এই রায় দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে পদত্যাগের পর মোশাররফ দেশ ছাড়েন এবং ২০১৬ সালে চিকিৎসার জন্য দুবাই যান। সেখানেই ২০২৩ সালে তাঁর মৃত্যু হয়; রায় কার্যকর হয়নি।

ঈদের সকালে সাদ্দামের ফাঁসি
২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর—ঈদুল আজহার সকালে—মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের। ১৯৭৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ইরাক শাসন করেন। শাসনামলে দুজাইল শহরে শিয়াদের হত্যা, হালাবজায় রাসায়নিক হামলাসহ গণহত্যার অভিযোগে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়।

২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ইরাকে হামলা চালানোর পর ২০০৪ সালের জুনে সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৫ সালের অক্টোবর থেকে বিচার শুরু হয়ে ২০০৬ সালের নভেম্বরে রায় ঘোষণা হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যেই তা কার্যকর করা হয়।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, সিএনএন, ব্রিটানিকা