জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে পাঁচ বছরের দণ্ড পাওয়ায় রাজসাক্ষী সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কারাগারের ডিভিশন-১ সুবিধা বাতিল হতে যাচ্ছে। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের বিশেষ কারাগারে রয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় কারাবিধি অনুযায়ী তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিভিশন-২ সুবিধা পাবেন এবং পরতে হবে কয়েদির পোশাক।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোতাহের হোসেন জানান, “সাজা হলে কোনো বন্দির ডিভিশন-১ সুবিধা বহাল থাকে না। সাবেক আইজিপি চাইলে ডিভিশন-২ বজায় রাখতে সরকারের কাছে আবেদন করতে পারেন; অনুমোদন না পেলে তাকে সাধারণ বন্দির মতো থাকতে হবে।”
কারাবিধি অনুসারে বন্দিদের সামাজিক মর্যাদা, রাষ্ট্রীয় পদ, সম্মাননা ও জীবনযাপনের ধরন বিবেচনায় ডিভিশন—১, ২ বা ৩— প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রের প্রকাশিত ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে ১–১৮ নম্বরে থাকা ব্যক্তিরা ডিভিশন-১ পাওয়ার যোগ্য।
আইনজীবী জায়েদ বিন আযাদ জানান, রায়ের অনুলিপি এখনও না পাওয়ায় আপিলের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। তার বিরুদ্ধে আরও একটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন থানায় ও আদালতে তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা ঝুলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মামুনের বিরুদ্ধে মোট দেড় শতাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ মামলার আসামি ডিএমপির সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ—তার বিরুদ্ধে মামলা অন্তত ১৭৫টি।
গণঅভ্যুত্থানের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক আইজিপি মামুনসহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করে। এ মামলায় আরও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার জসীম উদ্দীন মোল্লা, পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন, মহিউদ্দিন ফারুকী, এস এম তানভীর আরাফাত, আসাদুজ্জামান, আব্দুল্লাহিল কাফী ও জুয়েল রানা।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ১৯৮২ সালে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। পরে র্যাবের মহাপরিচালক ও ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের ২৯তম মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।




















