বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় এবার বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। দলটির তথ্য অনুযায়ী, ৩০০ আসনের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই থাকছেন নতুন মুখ, যারা আগে কখনো জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেননি। প্রবীণদের পরিবর্তে ৩৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী তরুণ নেতৃত্বকে সামনে আনা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করাই জামায়াতের মূল লক্ষ্য।
জানা গেছে, এবারের তালিকায় অন্তত চারজন সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য (ভিসি), সাবেক ভিপি এবং জিএস মনোনয়ন পাচ্ছেন। চলমান রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নেওয়া মহিলা, অমুসলিম, জুলাই যোদ্ধা, ছাত্র প্রতিনিধি ও পেশাজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করতে চায় দলটি। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্তকরণের পর বড় ধরনের চমক থাকবে বলে জামায়াতের সূত্র জানিয়েছে। শরিকদের জন্য আসন বরাদ্দ নিশ্চিত করতেও আলোচনা চলছে। জোট না হলে দলের নিজের কয়েকজন প্রার্থীকে আসন ছাড় দেওয়া হতে পারে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, প্রাথমিক তালিকার ভিত্তিতে আগামী মাসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবার তরুণদের উপস্থিতি বেশি থাকবে। অন্যদিকে, ৩০০ আসনের প্রার্থী তালিকায় ১৮ জন চিকিৎসক দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এর মধ্যে দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা-১৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এবং নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের কুমিল্লা-১১ আসনে লড়বেন। এছাড়া ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)-এর আরও ১৬ জন চিকিৎসককে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি—যাদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল, ডা. জেহাদ খান, ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, ডা. সুলতান আহমেদ, ডা. ফজলুল হক, ডা. আবু বকর সিদ্দিক, ডা. ফরিদুল আলম, ডা. শাহাদাৎ হোসেন, ডা. মোসলেহ উদ্দীন ফরিদ, ডা. আবু নাছের, ডা. আবদুল হামিদ, ডা. খালিদুজ্জামান, ডা. রেজাউল করিম, ডা. আব্দুল বারী, ডা. আব্দুর রহিম সরকার এবং ডা. ফখরুদ্দিন মানিক।
সম্প্রতি দেশে ফিরে জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিএনপি এখনো ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি, অথচ জামায়াত এক বছর আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তিনি দাবি করেন, দ্রুতই আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। গণতন্ত্রে ভিন্ন মত থাকতেই পারে, তবে তা যেন কখনো সংঘাতে রূপ না নেয়—এ কথা উল্লেখ করে তিনি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের আহ্বান জানান।
সব মিলিয়ে, তরুণ ও পেশাজীবী নেতৃত্বকে সামনে এনে এবং নতুন মুখের আধিক্য বজায় রেখে জামায়াত এবারের নির্বাচনে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।




















