মানুষকে আল্লাহ তাআলার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই একজন মুমিনের উচিত তার প্রতিটি মুহূর্তকে ইবাদতের মাধ্যম বানানো। দিনের শুরু থেকে শেষ অবধি সুন্নত অনুসারে চললে পুরো দিনটিই ইবাদতে পরিণত হতে পারে। বিশেষত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায় এবং বিভিন্ন মাসনুন দোয়া পাঠ করলে এমনকি টয়লেটে যাওয়া-আসাও ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।
দিনের শুরুর গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল তুলে ধরা হলো—
শেষ রাতে জাগ্রত হওয়া
মুমিনের অভ্যাস হলো শেষ রাতে ঘুম থেকে ওঠা। সম্ভব হলে তাহাজ্জুদ পড়া, নতুবা ফজরের আজানের সঙ্গে সঙ্গে জেগে ওঠা। জাগ্রত হওয়ার পর দোয়া—
“আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বাদা মা আমাতানা…” (বুখারি ৬৩১৪)
টয়লেটে যাওয়ার সুন্নত দোয়া
প্রবেশের আগে—
“বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা…”
বাহির হওয়ার সময়—
“আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা…”
মুখ পরিষ্কার করা
ঘুম থেকে জাগার পর, নামাজের আগে, মজলিসে যাওয়ার আগে এবং কোরআন পড়ার আগে মিসওয়াক করা মুস্তাহাব।
অজু করা
নামাজের চাবি হলো পবিত্রতা। তাই অজুর ফরজ, সুন্নত ও মুস্তাহাব ভালোভাবে আদায় করা জরুরি।
ফজরের নামাজ
প্রথমে দুই রাকাত সুন্নত, এরপর দুই রাকাত ফরজ।
সুন্নত মিস হলে সূর্য ওঠার পর তা পড়ে নেওয়ার নির্দেশ আছে।
ফরজের পর আয়াতুল কুরসি
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়লে জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকে না।
সকাল-সন্ধ্যার দোয়াগুলো
-
রাযিতু বিল্লাহি রব্বা… — ৩ বার
-
সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার — সকাল-সন্ধ্যায়
-
আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান নার — ফজর ও মাগরিবের পর ৭ বার
-
হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া… — ৭ বার (পেরেশানি দূর হয়)
-
বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু… — ৩ বার (মুসিবত থেকে হেফাজত)
-
আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি… — ৩ বার
এ ছাড়া সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস তিনবার করে পড়াও সুন্নত।
সুরা ইয়াসিন তিলাওয়াত
সকালে সুরা ইয়াসিন পড়ার বহু ফজিলত রয়েছে।
ইশরাকের নামাজ
সূর্যোদয়ের প্রায় ২৩–২৪ মিনিট পর দুই বা চার রাকাত ইশরাক আদায় করা সুন্নত। এর বড় ফজিলত উল্লেখ আছে হাদিসে।
দুনিয়াবি কাজে নিয়ত ঠিক রাখা
ইশরাক শেষে নাশতা ও নিয়মিত কাজে মনোনিবেশ করা। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করা এবং ইসলামী বিধান মেনে চললে দৈনন্দিন কাজও ইবাদতে পরিণত হয়।
ঘর থেকে বের হওয়ার দোয়া
“বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ…” — এতে নিরাপত্তা ও শয়তানের ধোঁকা থেকে হেফাজত থাকে। (তিরমিজি ৩৪২৬)
চাশতের নামাজ
সুযোগ হলে সকাল ৯টা–১১টার মধ্যে দুই বা চার রাকাত চাশত আদায় করা। রাসুল (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)-কে এই নামাজ কখনো না ছাড়ার অসিয়ত করেছিলেন।
প্রতিদিন কোরআন তিলাওয়াত
কোরআন কিয়ামতের দিন পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে—এমন স্পষ্ট হাদিস রয়েছে। তাই প্রতিদিন কিছু পরিমাণ হলেও তিলাওয়াত করা উচিত।


























