রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে পাথর দিয়ে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে চলমান ক্ষোভের মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড়ে মশাল মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ‘চাঁদাবাজি, দখলদারি ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে সরব হয়ে সংগঠনটি বিএনপির ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতাকর্মীদের দায়ী করে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, মিটফোর্ডের এই নৃশংসতা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি রাজনৈতিক চর্চার পরিণতি—যেখানে ছাত্ররাজনীতি ব্যবহার হচ্ছে চাঁদাবাজি, ভীতি ও খুনের ঢাল হিসেবে। মশাল মিছিল থেকে সংগঠনের সভাপতি রিফাত রশিদ বিএনপিকে সতর্ক করে বলেন, যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে নিজেরাই সন্ত্রাসে জড়াচ্ছে, তাদেরও প্রতিরোধ করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে, মানুষ অন্যায়-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। এখন সেই ঐক্য গড়ে তুলতে হবে দলের মুখোশধারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধেও। এই প্রতিবাদ শুধু একটি হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে নয়, বরং ছাত্রসমাজ ও প্রগতিশীল শক্তির পক্ষ থেকে চাঁদাবাজি ও দখলবাজির রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ডাক।
শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় মশাল মিছিলটি। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভে ‘ছাত্ররাজনীতি নয়, সন্ত্রাসবিরোধী রাজনীতি চাই’, ‘মাফিয়াচক্র নিপাত যাক’, ‘সোহাগ হত্যার বিচার চাই’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কপথ।
সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির ছাত্রদল ও যুবদলের একাধিক নেতাকর্মীর নাম উঠে আসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের প্রকাশ্যভাবে দায়ী করেছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, হত্যার পেছনে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় থাকলে তা শুধু সোহাগ নয়, গোটা সমাজের নিরাপত্তার ওপর হুমকি। তারা দাবি করেন, এ ধরনের অপরাধীদের রাজনৈতিক পরিচয় নয়, অপরাধী পরিচয়ই প্রাধান্য পেতে হবে।