সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার খবর সারা দেশে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তার দ্রুত আরোগ্যের জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, তারেক রহমান, দলীয় নেতারা এবং সাধারণ জনগণ এককভাবে দোয়া করছেন।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। মায়ের অসুস্থতা নিয়ে তিনি বিপর্যস্ত হলেও দেশ ফেরার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা রয়েছে। তিনি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন, “এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহস্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যে কোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য সবকিছুর মতো এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ নেই।”
দলের সূত্র জানায়, তারেক রহমান দেশে না আসার পাঁচটি মূল কারণ রয়েছে: জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কূটনীতি, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ইস্যু, পাসপোর্ট জটিলতা, ট্রাভেল পাস এবং রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ। তবে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর বিএনপি উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল নিশ্চিত করেছেন, “তারেক রহমান শিগগিরিই দেশে ফিরবেন। দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।”
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি এবং বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তারেক রহমান দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা মায়ের চিকিৎসার জন্য আসবেন এবং মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নাও হতে পারে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিদেশি ও দেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, সৌদি আরব, কাতার, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের চিকিৎসকরা তার নিয়মিত তদারকি করছেন। তারেক রহমানও সার্বক্ষণিকভাবে এই চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যা এবং অন্যান্য জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন। পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর তার অবস্থা সংকটময় বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
বিএনপি সূত্রের খবর, শারীরিক অবস্থা ভ্রমণ উপযোগী হলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে। পরিবারের প্রথম পছন্দ হচ্ছে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিক। কাতার এয়ার এ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সময়ে তাকে সেখানে নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।

























