সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর গুরুতর লঙ্ঘন করে রংপুরের ভিআইপি শাহাদাৎ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এরশাদ হোসেনকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রংপুর জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে ঘোষিত ৭০ সদস্যের কমিটিতে তার গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
বিধিমালার ২৫ (১) অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মচারীর রাজনৈতিক দলে যোগদান বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু এনসিপির একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই এরশাদ হোসেন সক্রিয়ভাবে দলীয় কার্যক্রমে যুক্ত আছেন।
নিজের পরিচয় গোপন করার চেষ্টা করে এরশাদ হোসেন দাবি করেন, তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নয়, হাইস্কুলে কর্মরত। তবে তার বক্তব্যকে ‘মিথ্যা’ উল্লেখ করে রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন যে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবেই কর্মরত। তিনি বলেন, “যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করে কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এরশাদ হোসেনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ভেতর ক্ষমতার অপব্যবহার, সহকর্মী শিক্ষিকাদের যৌন হয়রানি এবং মানহানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম জানান, এরশাদ হোসেন তার ছবি এডিট করে ছড়িয়ে দিয়ে মানহানি করেছে—এ ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন। আরও গুরুতর অভিযোগ, ২০১৫ সালে আরেক শিক্ষিকাকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় তিনি জেলও খেটেছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকার অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের পদ পেয়ে এরশাদ হোসেন তার অনৈতিক ও বেআইনি কর্মকাণ্ড আরও বৃদ্ধি করেছেন। এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাদিয়া ফারজানা দিনা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
সরকারি বিধি এত প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করে একজন গুরুতর অভিযোগের আসামিকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদ দেওয়ায় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী, দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় কর্মচারী আচরণবিধিকে অপমানিত করার সামিল হবে।




















