ঢাকা ০৮:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাহাড় কেটে বিএনপি–আওয়ামী লীগ নেতাদের মাটি বিক্রির মহোৎসব

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৭:২৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৩৬ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির বেপরোয়া মহোৎসব বন্ধ হচ্ছে না কোনোভাবেই। প্রশাসনের অভিযান, জরিমানা ও নজরদারির পরও থামছে না পাহাড় খেকোদের রাতের তাণ্ডব। সর্বশেষ সরেজমিনে দেখা গেছে—বিএনপি ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা মিলে গড়ে তুলেছেন পাহাড় কাটার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট, যারা রাতের অন্ধকারে এক্সকেভেটর চালিয়ে কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে পাহাড়।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বড়হাতিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাকফিরানী দুর্লভেরপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা বিশাল এক পাহাড়ের অর্ধেকই কেটে ফেলা হয়েছে। প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতা ও ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যের পাহাড়টি গত এক সপ্তাহ ধরে এক্সকেভেটর দিয়ে কেটে শতাধিক গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। ৪–৫টি ডাম্পার ট্রাকে এসব মাটি রাতভর বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে—গাড়িপ্রতি ১,৫০০ থেকে ২,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব মাটি।

স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়টি নুরুল কবিরের ছেলে জাফর ও মনজুর এবং আলী আহামদের ছেলে শামসুল ইসলামের মালিকানাধীন। রাত গভীর হলে শুরু হয় পাহাড় কাটার প্রকৃত অভিযান। প্রভাবশালী হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

তদন্তে জানা গেছে, পাহাড় কাটার পশ্চিম পাশের কাজ করছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা হেলাল উদ্দীন, আর পূর্ব পাশের বড় অংশ কেটে সমতল করছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর মো. আইয়ুব, যিনি সাবেক এমপি আবু রেজা নদভীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। অভিযোগের বিষয়ে হেলাল উদ্দীন নিজেই স্বীকার করে বলেন—“আমি পশ্চিমের অংশ কাটছি, আর পূর্বের অংশ কাটছে আইয়ুব।” অন্যদিকে আইয়ুব ফোনে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে কল বন্ধ করে দেন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলার পরিচালক মইনুদ্দীন ফয়সালের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং এছেন বলেন, পাহাড় ও বালু খেকোদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দিন দিন বাড়লেও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমার কোনো লক্ষণ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

জনপ্রিয় সংবাদ

পাহাড় কেটে বিএনপি–আওয়ামী লীগ নেতাদের মাটি বিক্রির মহোৎসব

আপডেট সময় ০৭:২৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির বেপরোয়া মহোৎসব বন্ধ হচ্ছে না কোনোভাবেই। প্রশাসনের অভিযান, জরিমানা ও নজরদারির পরও থামছে না পাহাড় খেকোদের রাতের তাণ্ডব। সর্বশেষ সরেজমিনে দেখা গেছে—বিএনপি ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা মিলে গড়ে তুলেছেন পাহাড় কাটার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট, যারা রাতের অন্ধকারে এক্সকেভেটর চালিয়ে কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে পাহাড়।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বড়হাতিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাকফিরানী দুর্লভেরপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা বিশাল এক পাহাড়ের অর্ধেকই কেটে ফেলা হয়েছে। প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতা ও ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যের পাহাড়টি গত এক সপ্তাহ ধরে এক্সকেভেটর দিয়ে কেটে শতাধিক গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। ৪–৫টি ডাম্পার ট্রাকে এসব মাটি রাতভর বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে—গাড়িপ্রতি ১,৫০০ থেকে ২,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব মাটি।

স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়টি নুরুল কবিরের ছেলে জাফর ও মনজুর এবং আলী আহামদের ছেলে শামসুল ইসলামের মালিকানাধীন। রাত গভীর হলে শুরু হয় পাহাড় কাটার প্রকৃত অভিযান। প্রভাবশালী হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

তদন্তে জানা গেছে, পাহাড় কাটার পশ্চিম পাশের কাজ করছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা হেলাল উদ্দীন, আর পূর্ব পাশের বড় অংশ কেটে সমতল করছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর মো. আইয়ুব, যিনি সাবেক এমপি আবু রেজা নদভীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। অভিযোগের বিষয়ে হেলাল উদ্দীন নিজেই স্বীকার করে বলেন—“আমি পশ্চিমের অংশ কাটছি, আর পূর্বের অংশ কাটছে আইয়ুব।” অন্যদিকে আইয়ুব ফোনে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে কল বন্ধ করে দেন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলার পরিচালক মইনুদ্দীন ফয়সালের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং এছেন বলেন, পাহাড় ও বালু খেকোদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দিন দিন বাড়লেও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমার কোনো লক্ষণ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।