নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। কিন্তু ঘোষণার পর থেকেই তিন আসনে মনোনয়নবঞ্চিতদের ক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। মশাল মিছিল, বিক্ষোভ, সমাবেশসহ নানা কর্মসূচিতে মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এমনকি ধানের শীষের প্রার্থী বাতিলের দাবিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন বঞ্চিতরা। সব মিলিয়ে দলীয় প্রতীক ঘিরে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি চরম অস্থিরতায় পড়েছে।
অন্যদিকে গত এক বছর ধরেই পাঁচটি আসনে একক প্রার্থী নিয়ে সংগঠিতভাবে নির্বাচন প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী, যা ভোটারদের চোখে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
নারায়ণগঞ্জ–১ (রূপগঞ্জ)
এ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু। মনোনয়ন না পেলেও কাজী মনিরুজ্জামান মনির তার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে এখানে বিএনপি বেশ ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে আছে।
জামায়াতের প্রার্থী আনোয়ার হোসাইন মোল্লাও নিয়মিত প্রচারণা চালাচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জ–২ (আড়াইহাজার)
এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন নজরুল ইসলাম আজাদ। কিন্তু বঞ্চিত মাহমুদুর রহমান সুমন, পারভীন আক্তার ও সাবেক এমপি আঙ্গুরের নেতৃত্বে পুনর্বিবেচনার আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
জামায়াতের প্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা ধারাবাহিক প্রচারে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। বিএনপির কোন্দল বাড়ায় সংঘর্ষের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ–৩ (সোনারগাঁ–সিদ্ধিরগঞ্জ)
বিএনপির প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান। কিন্তু বঞ্চিত মামুন মাহমুদ, সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন ও রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ধারাবাহিক বিক্ষোভ চলছে। মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে তারেক রহমানকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
জামায়াতের প্রার্থী ড. ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া নিয়মিত মাঠে সক্রিয় আছেন।
নারায়ণগঞ্জ–৪ (ফতুল্লা–আলীরটেক–গোগনগর)
এখানে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। জোটের পক্ষ থেকে জমিয়তের মনির হোসাইন কাসেমী মাঠে আছেন।
বিএনপির শাহ্ আলম, মাসুকুল ইসলাম রাজীব ও রনি সক্রিয় থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল করছে।
জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আবদুল জব্বার নিয়মিত গণসংযোগ করছেন।
এ আসনে বিএনপি থেকে একাধিক স্বাধীন প্রার্থী নেমে গেলে জামায়াতের জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে—এমন ধারণা ভোটারদের মধ্যে রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ–৫ (সিটি করপোরেশন এলাকা ও বন্দর)
বিএনপির প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। কিন্তু সাখাওয়াত হোসেন খান, আবু আল ইউসুফ টিপু, সাবেক এমপি আবুল কালামসহ অনেকেই মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে মাঠে আছেন। মাসুদ নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমদ সবসময় নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত।
সাধারণ ভোটারদের মতে, বিএনপি এক থাকলে এ আসনে জয়ের সম্ভাবনা তাদেরই বেশি। তবে বিদ্রোহী শক্তি তৈরি হলে জামায়াত বড় সুবিধা পেতে পারে।

























