জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোট, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ পাঁচ দফা দাবির পক্ষে জনমত সৃষ্টি এবং গণভোটে ‘হ্যাঁ’–এর বিজয় নিশ্চিত করতে বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচি শেষ করেছে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত আট দল। গত শনিবার সিলেট বিভাগের সমাবেশের মধ্য দিয়ে ঢাকার বাইরে সাত বিভাগে ঘোষিত এই কর্মসূচি সম্পন্ন হয়। সংশ্লিষ্টদের মতে, সমাবেশগুলোতে ব্যাপক লোকসমাগম আট দলের প্রতি তৃণমূলের আগ্রহ, সমর্থন ও ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করেছে।
নেতাকর্মীরা জানান, বিভাগীয় পর্যায়ের সমাবেশ সফল হওয়ায় আট দলের পাঁচ দফা দাবি তৃণমূলে ছড়িয়ে গেছে। এতে অন্যান্য দলও এই জোটে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এখন সামনে আসছে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি, বিশেষ করে আসন সমঝোতা ও যৌথ কর্মপন্থা নির্ধারণের বিষয়টি। আজ সোমবার আট দলের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি ও খেলাফত আন্দোলন অভিন্ন কর্মসূচি শুরু করে। পরে জাগপা ও বিডিপি যুক্ত হয়ে আট দল গঠন করে। গত ১১ নভেম্বর রাজধানীতে শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে বড় সমাবেশের পর ঢাকার বাইরে সাত বিভাগে পৃথক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
৩০ নভেম্বর রাজশাহী, ১ ডিসেম্বর খুলনা, ২ ডিসেম্বর বরিশাল, ৩ ডিসেম্বর রংপুর, ৪ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ, ৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম এবং ৬ ডিসেম্বর সিলেটে আয়োজিত এসব সমাবেশে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান, চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকসহ আট দলের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন। বিপুল জনসমাগম দেখে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জনসমর্থন এ মুহূর্তে ইসলামি শক্তির দিকে ঝুঁকছে।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, বিভাগীয় সমাবেশে আট দলের ঐক্য ও দাবি তৃণমূলে আরও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এই অর্জন ফ্যাসিবাদবিরোধী জনতার বিজয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ মনে করেন, জনগণ ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার যে স্বপ্ন দেখছে, তা কেবল ইসলামি শক্তির নেতৃত্বেই সম্ভব। তিনি মনে করেন, মাঠ পর্যায়ের শক্ত ঐক্য ও ব্যাপক জনসমর্থন ভবিষ্যতে আট দলের সঙ্গে আরও দল যুক্ত হওয়ার পথ খুলে দেবে।
আসন সমঝোতা প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রতিটি দল নিজস্ব প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত করেছে। পারস্পরিক চাহিদা, সক্ষমতা ও সম্ভাবনার ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা করা হবে। চলতি সপ্তাহেই অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক ড. হামিদুর রহমান আযাদ জানান, আজকের বৈঠকে বিভাগীয় সমাবেশ পর্যালোচনা, ভবিষ্যৎ করণীয়, নির্বাচন ও গণভোট–সংক্রান্ত পুরো কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, সাত বিভাগেই অপ্রত্যাশিত জনসাড়া পাওয়া গেছে এবং অনেক দল আট দলে যুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।























