ঢাকা ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার জন্য অপেক্ষায় তারেক রহমান

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:৩২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৩১ বার পড়া হয়েছে

মায়ের জন্য সন্তানের দীর্ঘ অপেক্ষা—এ যেন থামতেই চায় না। লন্ডনে বসে প্রতি মুহূর্তে মায়ের খবর নিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। উন্নত চিকিৎসার আশায় কবে লন্ডনে যেতে পারবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া—এমন প্রশ্নে অনিশ্চয়তা ঘনিয়ে আসছে। এদিকে লন্ডনযাত্রায় সঙ্গী হতে ঢাকায় এসেছেন পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। শাশুড়ির শয্যার পাশে থেকে তিনি স্বাস্থ্যসেবা ও সার্বিক তদারকি করে যাচ্ছেন।

গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন। ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ২৭ নভেম্বর থেকে তার অবস্থা ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ পর্যায়ে রয়েছে। তবুও চিকিৎসকদের ডাকে সাড়া দিচ্ছেন তিনি। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে চলছে নিখুঁত চিকিৎসা। করা হয়েছে এন্ডোস্কপি ও মাইনর অপারেশনও।

মেডিকেল বোর্ড বলছে, এখনো তিনি ঝুঁকিমুক্ত নন, বিদেশ যাত্রার মতো অবস্থায় পৌঁছাননি। ১২–১৪ ঘণ্টার দীর্ঘ জার্নি তিনি সহ্য করতে পারবেন না—এমন আশঙ্কা থেকেই চিকিৎসকেরা গ্রিন সিগন্যাল দিতে পারছেন না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হলেও শারীরিক নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

রোববার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, কিছু রিপোর্ট আগের চেয়ে ভালো এসেছে। ফলে বোর্ড ভাবছে—বিদেশ না নিয়ে দেশেই চিকিৎসা সম্পন্ন করা যায় কি না। অতীতেও শারীরিকভাবে বেশি সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে সেরে উঠেছেন খালেদা জিয়া—এ বিষয়টিও চিকিৎসকদের আশাবাদী করছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম জিয়া দেশ ও মানুষের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা মানুষ কখনো ভুলে যায় না। সারা বিশ্ব আজ তার আরোগ্য কামনা করছে—এটাই প্রমাণ করে তিনি মানুষের হৃদয়ে কতটা গভীরভাবে জায়গা করে নিয়েছেন।

রোববার বিকেলে শাশুড়িকে দেখতে হাসপাতালে যান ডা. জুবাইদা রহমান। টানা ১৫ দিন ধরে হাসপাতালের নিবিড় পরিবেশে চলছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। বাইরে দেখা যায়, পথচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংবাদকর্মী—সবার নজরই স্থির এভারকেয়ারের দিকে।

এদিকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে খালেদা জিয়ার অসাধারণ ভূমিকা ছিল। তার অবনতিশীল শারীরিক অবস্থা নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েও মানুষের মনে শঙ্কা তৈরি করেছে।

২৭ নভেম্বর থেকে হাসপাতালের সামনে দেখা যায় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভিড়—রিকশাচালক, চাকরিজীবী, ছাত্র, শিক্ষকসহ সব শ্রেণির মানুষ দোয়া করছেন তার সুস্থতার জন্য। কোনো রাজনৈতিক শোডাউন নয়—মানুষের আবেগ, ভালোবাসা ও সম্মানেই এই ঢল। উপস্থিত অনেকে বলেন, দেশের জন্য যিনি আজীবন লড়েছেন, কষ্ট সহ্য করেছেন, তিনি রাজনীতির সীমানা পেরিয়ে এখন মানুষের আবেগে পরিণত হয়েছেন।

মায়ের আরোগ্যের অপেক্ষায় লন্ডনে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন তারেক রহমান। আর ঢাকায় হাসপাতালের কক্ষে শাশুড়ির হাত ধরে রয়েছেন ডা. জুবাইদা রহমান। অপেক্ষা—শুধু চিকিৎসকদের একটুখানি সবুজ সংকেতের।

জনপ্রিয় সংবাদ

সীমান্তে মৃত বাংলাদেশি মায়ের মুখ দেখলেন ভারতে থাকা মেয়ে

খালেদা জিয়ার জন্য অপেক্ষায় তারেক রহমান

আপডেট সময় ১০:৩২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

মায়ের জন্য সন্তানের দীর্ঘ অপেক্ষা—এ যেন থামতেই চায় না। লন্ডনে বসে প্রতি মুহূর্তে মায়ের খবর নিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। উন্নত চিকিৎসার আশায় কবে লন্ডনে যেতে পারবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া—এমন প্রশ্নে অনিশ্চয়তা ঘনিয়ে আসছে। এদিকে লন্ডনযাত্রায় সঙ্গী হতে ঢাকায় এসেছেন পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। শাশুড়ির শয্যার পাশে থেকে তিনি স্বাস্থ্যসেবা ও সার্বিক তদারকি করে যাচ্ছেন।

গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন। ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ২৭ নভেম্বর থেকে তার অবস্থা ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ পর্যায়ে রয়েছে। তবুও চিকিৎসকদের ডাকে সাড়া দিচ্ছেন তিনি। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে চলছে নিখুঁত চিকিৎসা। করা হয়েছে এন্ডোস্কপি ও মাইনর অপারেশনও।

মেডিকেল বোর্ড বলছে, এখনো তিনি ঝুঁকিমুক্ত নন, বিদেশ যাত্রার মতো অবস্থায় পৌঁছাননি। ১২–১৪ ঘণ্টার দীর্ঘ জার্নি তিনি সহ্য করতে পারবেন না—এমন আশঙ্কা থেকেই চিকিৎসকেরা গ্রিন সিগন্যাল দিতে পারছেন না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হলেও শারীরিক নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

রোববার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, কিছু রিপোর্ট আগের চেয়ে ভালো এসেছে। ফলে বোর্ড ভাবছে—বিদেশ না নিয়ে দেশেই চিকিৎসা সম্পন্ন করা যায় কি না। অতীতেও শারীরিকভাবে বেশি সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে সেরে উঠেছেন খালেদা জিয়া—এ বিষয়টিও চিকিৎসকদের আশাবাদী করছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম জিয়া দেশ ও মানুষের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা মানুষ কখনো ভুলে যায় না। সারা বিশ্ব আজ তার আরোগ্য কামনা করছে—এটাই প্রমাণ করে তিনি মানুষের হৃদয়ে কতটা গভীরভাবে জায়গা করে নিয়েছেন।

রোববার বিকেলে শাশুড়িকে দেখতে হাসপাতালে যান ডা. জুবাইদা রহমান। টানা ১৫ দিন ধরে হাসপাতালের নিবিড় পরিবেশে চলছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। বাইরে দেখা যায়, পথচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংবাদকর্মী—সবার নজরই স্থির এভারকেয়ারের দিকে।

এদিকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে খালেদা জিয়ার অসাধারণ ভূমিকা ছিল। তার অবনতিশীল শারীরিক অবস্থা নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েও মানুষের মনে শঙ্কা তৈরি করেছে।

২৭ নভেম্বর থেকে হাসপাতালের সামনে দেখা যায় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভিড়—রিকশাচালক, চাকরিজীবী, ছাত্র, শিক্ষকসহ সব শ্রেণির মানুষ দোয়া করছেন তার সুস্থতার জন্য। কোনো রাজনৈতিক শোডাউন নয়—মানুষের আবেগ, ভালোবাসা ও সম্মানেই এই ঢল। উপস্থিত অনেকে বলেন, দেশের জন্য যিনি আজীবন লড়েছেন, কষ্ট সহ্য করেছেন, তিনি রাজনীতির সীমানা পেরিয়ে এখন মানুষের আবেগে পরিণত হয়েছেন।

মায়ের আরোগ্যের অপেক্ষায় লন্ডনে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন তারেক রহমান। আর ঢাকায় হাসপাতালের কক্ষে শাশুড়ির হাত ধরে রয়েছেন ডা. জুবাইদা রহমান। অপেক্ষা—শুধু চিকিৎসকদের একটুখানি সবুজ সংকেতের।