আসন বণ্টনে ন্যায্য সমঝোতা না হলে বিএনপি থেকে পথ আলাদা করে নতুন নির্বাচনি জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছে তাদের ২৯টি মিত্র রাজনৈতিক দল। তারা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপিকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পল্টনে নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে অংশ নিয়ে এসব মিত্র দল বিএনপির প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে। বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, নেজামে ইসলামী পার্টি, গণফোরামসহ মোট ২৯টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান জানান, তারা ২৯ দল একত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হক ফোনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে জানিয়ে দিয়েছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ন্যায্যতার ভিত্তিতে আসন সমঝোতা না হলে তারা বিকল্প জোট গঠন করবেন।
বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, সাইফুল হক ও জোনায়েদ সাকি, ১২ দলীয় জোটের নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার ও এহসানুল হুদা, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, সমমনা জোটের নেতা ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী, নেজামে ইসলামী পার্টির নেতা আশরাফুল ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এহসানুল হুদা বলেন, ‘দীর্ঘদিনের মিত্রদের প্রতি বিএনপির আচরণে আমরা বিস্মিত ও ব্যথিত। আলোচনা না করেই হঠাৎ সিদ্ধান্ত (প্রার্থী ঘোষণা) নেওয়ায় অনেকেই তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন। আমরা ন্যায্য মূল্যায়ন চাই, অবমূল্যায়ন নয়।’
বৈঠকে নেতারা অভিযোগ করেন, যেখানে জামায়াত নতুন নতুন সহযোগী বাড়াচ্ছে, সেখানে বিএনপি বরং পুরোনো মিত্রদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। তাদের মতে, বিএনপির হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন শুধু অস্বস্তিকরই নয়, রাজনৈতিকভাবে অস্বাভাবিকও।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি এখন পর্যন্ত দুই ধাপে ২৭২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এখনো ফাঁকা আছে আরও ২৮টি আসন, যেখানে অধিকাংশ শরিক দলের প্রার্থী হওয়ার কথা। তবে বিএনপির ভেতরে এসব আসনে নিজ দলের প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে।



















