ঢাকা ১২:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাদীকে গুলি করা ব্যক্তি নানক ও কামালের ঘনিষ্ঠ অনুসারী

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৬:৪১:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৪৯ বার পড়া হয়েছে

ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে দাবি উঠেছে। দৈনিক আমার দেশ–এর কাছে আসা বেশ কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে হাদির পাশেই বসে আছেন। তবে সংবাদমাধ্যমটি তার পরিচয় প্রকাশ করেনি।

এদিকে আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেন, ওই ব্যক্তির নাম ফয়সাল করিম মাসুদ (ছদ্মনাম দাউদ বিন ফয়সাল)। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং আদাবর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। সায়েরের দাবি অনুযায়ী, ফয়সাল করিম মাসুদ সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্ঠ অনুসারী।

আরেকটি পোস্টে জুলকারনাইন সায়ের উল্লেখ করেন, ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের একজন হিসেবে অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকার আদাবরে একটি স্কুলে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সে সময় তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি। সায়ের প্রশ্ন তোলেন, এমন একজন ব্যক্তি কীভাবে জামিনে মুক্তি পেলেন।

আমার দেশ–এর হাতে থাকা ছবিগুলোর একটি চলতি মাসের ৯ তারিখে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে তোলা। ছবিতে দেখা যায়, যাকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে, তিনি সেদিন হাদির পাশেই বসে ছিলেন এবং তারা একসঙ্গেই সেখানে উপস্থিত হন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, মোটরসাইকেলে আসা হামলাকারীরা হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। হামলাকারীরা তিনটি মোটরসাইকেলে করে এসেছিল বলেও তিনি জানান। রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

হাদির এক সহযোদ্ধা জানান, জুমার নামাজের পর মসজিদে তাদের লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একত্র হয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা ছিল তাদের।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক চিকিৎসকদের বরাতে জানান, মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওসমান হাদিকে জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। গুলি বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় তার ব্রেনস্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত। আগামী ৭২ ঘণ্টা তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে দেওয়া এক পোস্টে শরিফ ওসমান হাদি নিজেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এবং সরাসরি আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন। তিনি জানান, বিদেশি নম্বর থেকে একাধিক হুমকির কল পেয়েছেন এবং তার পরিবারসহ তাকেই টার্গেট করা হচ্ছে। ওই পোস্টে তিনি স্পষ্ট করেন, কোনো হুমকিতেই তিনি তার আন্দোলনের পথ থেকে সরে দাঁড়াবেন না।

জনপ্রিয় সংবাদ

জেনেভায় রোহিঙ্গা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, অগ্রগতি তুলে ধরবে বাংলাদেশ

হাদীকে গুলি করা ব্যক্তি নানক ও কামালের ঘনিষ্ঠ অনুসারী

আপডেট সময় ০৬:৪১:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে দাবি উঠেছে। দৈনিক আমার দেশ–এর কাছে আসা বেশ কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে হাদির পাশেই বসে আছেন। তবে সংবাদমাধ্যমটি তার পরিচয় প্রকাশ করেনি।

এদিকে আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেন, ওই ব্যক্তির নাম ফয়সাল করিম মাসুদ (ছদ্মনাম দাউদ বিন ফয়সাল)। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং আদাবর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। সায়েরের দাবি অনুযায়ী, ফয়সাল করিম মাসুদ সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্ঠ অনুসারী।

আরেকটি পোস্টে জুলকারনাইন সায়ের উল্লেখ করেন, ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের একজন হিসেবে অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকার আদাবরে একটি স্কুলে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সে সময় তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি। সায়ের প্রশ্ন তোলেন, এমন একজন ব্যক্তি কীভাবে জামিনে মুক্তি পেলেন।

আমার দেশ–এর হাতে থাকা ছবিগুলোর একটি চলতি মাসের ৯ তারিখে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে তোলা। ছবিতে দেখা যায়, যাকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে, তিনি সেদিন হাদির পাশেই বসে ছিলেন এবং তারা একসঙ্গেই সেখানে উপস্থিত হন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, মোটরসাইকেলে আসা হামলাকারীরা হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। হামলাকারীরা তিনটি মোটরসাইকেলে করে এসেছিল বলেও তিনি জানান। রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

হাদির এক সহযোদ্ধা জানান, জুমার নামাজের পর মসজিদে তাদের লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একত্র হয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা ছিল তাদের।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক চিকিৎসকদের বরাতে জানান, মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওসমান হাদিকে জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। গুলি বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় তার ব্রেনস্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত। আগামী ৭২ ঘণ্টা তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে দেওয়া এক পোস্টে শরিফ ওসমান হাদি নিজেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এবং সরাসরি আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন। তিনি জানান, বিদেশি নম্বর থেকে একাধিক হুমকির কল পেয়েছেন এবং তার পরিবারসহ তাকেই টার্গেট করা হচ্ছে। ওই পোস্টে তিনি স্পষ্ট করেন, কোনো হুমকিতেই তিনি তার আন্দোলনের পথ থেকে সরে দাঁড়াবেন না।