ঢাকা ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিজের সবকিছুর বিনিময়ে হলেও আল্লাহ শরিফ ওসমান হাদিকে ফিরিয়ে দিন: মাহমুদুর রহমান

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৭:৪৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৩১ বার পড়া হয়েছে

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ফজরের নামাজে তিনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছেন—নিজের সবকিছুর বিনিময়ে হলেও যেন শরিফ ওসমান হাদিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, “আমাদের আর দেশকে দেওয়ার কিছু নেই, কিন্তু হাদির দেওয়ার এখনো অনেক কিছু বাকি।”

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, হাদি শুধু একজন ব্যক্তি নন; তিনি জুলাই বিপ্লবের প্রতিচ্ছবি। হাদির ওপর হামলা করে জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে থামিয়ে দেওয়া যাবে না। তিনি ঘোষণা দেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখান থেকেই আগামী দিনের আন্দোলনের নতুন অধ্যায় শুরু হবে।

বক্তব্যের শুরুতে হাদির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফেরার সময় হাদিই তাকে বিমানবন্দরে রিসিভ করেছিলেন। মাত্র পাঁচ মাস আগে তারা একসঙ্গে তার মায়ের দাফন সম্পন্ন করেছেন। “আজ সেই হাদি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে”—বলে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন।

ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, বহু ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও জুলাই বিপ্লব পরাজিত হয়নি—হাদি তারই প্রমাণ। যারা জুলাইকে বিপ্লব বলতে অস্বীকার করে, তারা মূলত নিজেদের রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তথাকথিত সুশীল সমাজের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা কখনোই ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। নতুন প্রজন্মকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই লড়াই তরুণদেরই এগিয়ে নিতে হবে।

হাদির কালচারাল উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে আমার দেশ সম্পাদক বলেন, তরুণদের বইমুখী করতে হাদি যে কালচারাল সেন্টার গড়ে তুলেছিলেন, আজ থেকে তিনি সেই কেন্দ্রের দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। “হাদি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার অসমাপ্ত কাজ আমি চালিয়ে নিয়ে যাব,” বলেন তিনি।

ড. মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের আগের দিন ঘোষণা করা হবে—এই বিজয় দিল্লির কাছ থেকে পাওয়া নয় এবং দিল্লির কাছে সমর্পণও করা হবে না। তিনি অভিযোগ করেন, দেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে, যা প্রতিহত করতে সর্বদলীয় ঐক্য প্রয়োজন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দিতে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। হাদির ওপর হামলার আগে একাধিকবার হুমকির তথ্য সরকারকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এ সময় সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, এই সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে ১৫ ডিসেম্বর শহীদ মিনার থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, একজন হাদিকে গুলি করে এই লড়াই থামানো যাবে না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবার রুখে দাঁড়িয়ে জুলাই বিপ্লবকে পূর্ণতা দিতে হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

হাদিকে হত্যাচেষ্টার নেপথ্যে যুবলীগ নেতা সম্রাট; যোগসূত্র খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

নিজের সবকিছুর বিনিময়ে হলেও আল্লাহ শরিফ ওসমান হাদিকে ফিরিয়ে দিন: মাহমুদুর রহমান

আপডেট সময় ০৭:৪৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ফজরের নামাজে তিনি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছেন—নিজের সবকিছুর বিনিময়ে হলেও যেন শরিফ ওসমান হাদিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, “আমাদের আর দেশকে দেওয়ার কিছু নেই, কিন্তু হাদির দেওয়ার এখনো অনেক কিছু বাকি।”

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, হাদি শুধু একজন ব্যক্তি নন; তিনি জুলাই বিপ্লবের প্রতিচ্ছবি। হাদির ওপর হামলা করে জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে থামিয়ে দেওয়া যাবে না। তিনি ঘোষণা দেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখান থেকেই আগামী দিনের আন্দোলনের নতুন অধ্যায় শুরু হবে।

বক্তব্যের শুরুতে হাদির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফেরার সময় হাদিই তাকে বিমানবন্দরে রিসিভ করেছিলেন। মাত্র পাঁচ মাস আগে তারা একসঙ্গে তার মায়ের দাফন সম্পন্ন করেছেন। “আজ সেই হাদি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে”—বলে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন।

ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, বহু ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও জুলাই বিপ্লব পরাজিত হয়নি—হাদি তারই প্রমাণ। যারা জুলাইকে বিপ্লব বলতে অস্বীকার করে, তারা মূলত নিজেদের রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তথাকথিত সুশীল সমাজের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা কখনোই ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। নতুন প্রজন্মকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই লড়াই তরুণদেরই এগিয়ে নিতে হবে।

হাদির কালচারাল উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে আমার দেশ সম্পাদক বলেন, তরুণদের বইমুখী করতে হাদি যে কালচারাল সেন্টার গড়ে তুলেছিলেন, আজ থেকে তিনি সেই কেন্দ্রের দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। “হাদি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার অসমাপ্ত কাজ আমি চালিয়ে নিয়ে যাব,” বলেন তিনি।

ড. মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের আগের দিন ঘোষণা করা হবে—এই বিজয় দিল্লির কাছ থেকে পাওয়া নয় এবং দিল্লির কাছে সমর্পণও করা হবে না। তিনি অভিযোগ করেন, দেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে, যা প্রতিহত করতে সর্বদলীয় ঐক্য প্রয়োজন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দিতে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। হাদির ওপর হামলার আগে একাধিকবার হুমকির তথ্য সরকারকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এ সময় সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, এই সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হলে ১৫ ডিসেম্বর শহীদ মিনার থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, একজন হাদিকে গুলি করে এই লড়াই থামানো যাবে না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবার রুখে দাঁড়িয়ে জুলাই বিপ্লবকে পূর্ণতা দিতে হবে।