রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেছেন, ৩২ বছর বয়সে হাদি যে পরিমাণ ভালোবাসা ও দোয়া নিয়ে গেছে জাতির থেকে এই দেশে ১০০ বছরের কোনো নেতারও সেই অর্জন নেই। হাদি এটা করতে পেরেছে, কারণ সে মানুষের মনের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কথা বলেছিল ও কাজ করার চেষ্টা করেছিল।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে শহিদ শরিফ ওসমান হাদির স্মরণে ‘বুদ্ধিবৃত্তিক, সাংস্কৃতিক ও ইনসাফের বাংলাদেশ বিনির্মাণের লড়াইয়ে পথপ্রদর্শক একজন হাদি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। রাকসুর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাবি উপাচার্য বলেন, ইনসাফ এত সহজ নয়। লাঠি-দলবল নিয়ে চলাফেরা করার মধ্যে হিম্মত নাই। বরং যে মানুষটা আজ কোণঠাসা, তাকে রক্ষা করায় হলো প্রকৃত হিম্মত। সবকিছু এত সহজ নয়। এতদিনতো গর্তের ভেতরেই ছিলে। আমরা ১৫/২০ বছর লড়াই করেছি, আমরা লড়াইয়ের অর্থ বুঝি। কিন্তু আল্লাহ রহমত না করলে এখনো তোমরা গর্তের ভেতরেই থাকতে।
বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশ গঠন করতে গিয়ে শুধু হিংসা, বিদ্বেষ ছড়ানো মানুষগুলো হাদির সম্পর্কে কথা বলার আগে ভাববে। বিচারের কাজের একটা দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে। রাতারাতি সমাধান করতে গিয়ে আমরা আরও বেশি সংকট নিয়ে আসছি কিনা সেটা ও ভেবে দেখবা। ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে অবশ্যই তোমাকে শত্রুর নাগরিক অধিকার ও আদায় করতে হবে। এবং তুমি শুধু আশঙ্কা থেকে কোনো মতাদর্শের মানুষের ক্ষতি করতে পারবে না। তার জন্য তোমার প্রয়োজন প্রমাণ।
আলোচনা সভার সভাপতি ও রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, শহিদ শরিফ ওসমান হাদি যে বিপ্লবী চেতনা, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগ্রাম নিয়ে কাজ করেছেন, তা তার শাহাদাতের মাধ্যমে শেষ হয়নি। বরং তার শাহাদাতের পর কফিন ধরে এবং দাফনের পর অসংখ্য মানুষ শপথ নিয়েছে সেই পথেই এগিয়ে যাওয়ার। সারা দেশের মানুষ জানাজা ও গায়েবানা জানাজায় অংশ নিয়ে হাদির স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যে সংগ্রামের কথা হাদি বলেছিলেন, সেই লড়াই অব্যাহত থাকবে। যত নির্যাতন, গুলি বা শাহাদাতই আসুক না কেন, হাদির মতো হাজারো মানুষ তৈরি হবে ইনশাআল্লাহ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন- রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইবির সাবেক উপাচার্য ও রাবির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম, রাবি জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার ও রাবি ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক।
এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাকসুর বিতর্ক ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক ইমরান লস্কর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রাকসুর সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সামিয়া জাহান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।




















