কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক রাজিন সালেহর বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন এবং শিশু কন্যাকে মায়ের কাছ থেকে জোর করে আলাদা করার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে পাকুন্দিয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রাজিনের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার হাসি লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ আনেন।
সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া আক্তার জানান, পাঁচ বছর আগে রাজিন সালেহর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য রাজিন তাকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এমনকি ১৩ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি চাকরি নেয়ার সময় তার গহনা বিক্রি করতেও বাধ্য করেন। নির্যাতনের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে, এক পর্যায়ে তাকে বাবার বাড়ি চলে যেতে হয়। এরপরও তিনি সন্তানের মুখ চেয়ে সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন।
সুমাইয়ার দাবি, ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর রাজিন এনসিপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ৩০ জুন তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। তবে অভিযোগের পর কেন্দ্রীয় এক নেতা ফোনে তাকে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেন এবং মীমাংসার আশ্বাস দেন। কিন্তু কোনো সমাধান না হওয়ায় তিনি ফের ৯ জুলাই ইউএনওর কাছে যান। তিনি অভিযোগ করেন, গত ৫ জুলাই তার স্বামী এক আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে তাদের আড়াই বছরের মেয়েকে জোর করে নিয়ে যান এবং আর ফেরত দেননি।
এদিকে রাজিন সালেহ দাবি করেন, ২৭ জুন তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন এবং কাবিনের অর্থ ডাকযোগে পাঠিয়েছেন, যা সুমাইয়া প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, একটি মহল তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার ষড়যন্ত্র করছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। শিশু কন্যার ভবিষ্যৎ বিবেচনায় বিষয়টির ন্যায়বিচার হওয়া জরুরি। তিনি পরামর্শ দেন, বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা উচিত।