গাজীপুরে নির্মমভাবে খুন হওয়া সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মধ্য ভাটিপাড়া গ্রামের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে শোকের ছায়া। শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, তুহিনের বৃদ্ধ মা-বাবার আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। আশপাশের মানুষ শান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও থামছে না কান্না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তুহিনের বাবা মো. হাসান জামিল বলেন,
“ছেলে আমার জন্য নিয়মিত ওষুধের টাকা পাঠাতো। খবর নিত, আমি কেমন আছি। পরশু এক হাজার টাকা পাঠিয়েছে। এখন কে আমার খোঁজ নেবে? কে ওষুধ কিনে দেবে?”
ভাঙা কণ্ঠে তিনি বলেন,
“তুহিন আমার কলিজার টুকরা। তাকে জনসম্মুখে খুন করা হলো! এ কষ্ট আমি সইতে পারছি না।”
তুহিনের মা সাহাবিয়া খাতুন বকুল বিলাপ করে বলেন,
“তুহিন আমাকে ‘আম্মা’ বলে ডাকত, খবর নিত। এমন ভালো ছেলেকে যারা হত্যা করলো, তারা কি মানুষ? আমার ছেলের বিচার চাই।”
পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি এলাকাবাসীও এ হত্যাকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তুহিনের বড় ভাইয়ের স্ত্রী নূরুন্নাহার বেগম বলেন,
“তুহিন সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতো। যারা তাকে খুন করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসি দিতে হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান,
“তুহিন দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরে সাংবাদিকতা করতেন। এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডে পুরো এলাকা মর্মাহত। তার বাবা-মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। আমরাও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সাল থেকে তুহিন গাজীপুরের চান্দনা এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন। দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকায় কাজ করতেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে, চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে তাকে জনসম্মুখে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।