রাজশাহীতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের গাছ কেনা সংক্রান্ত দরপত্র ঘিরে বিএনপির দুই নেতার বিরুদ্ধে শাসানির অভিযোগ উঠেছে। নওগাঁর ঠিকাদার শাহজাহান আলী দাবি করেছেন, রাজশাহী মহানগরের রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান রুবেল তাকে দরপত্র না জমা দেওয়ার হুমকি দেন। এ নিয়ে তাদের ৯ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে রুবেলকে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করতেও শোনা যায়।
জানা গেছে, সম্প্রতি সওজ রাজশাহীর বৃক্ষপালনবিদের দপ্তর থেকে ৯টি লটে গাছ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। শাহজাহান আলী নিয়ম অনুযায়ী বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে দরপত্র জমা দিয়ে দুটি লটে প্রায় ৬ লাখ টাকার গাছ কেনার সুযোগ পান। এ নিয়েই রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ফোন করেন এবং ভবিষ্যতে সওজের দরপত্রে অংশ না নেওয়ার জন্য সরাসরি হুমকি দেন।
ফাঁস হওয়া অডিওতে রুবেল বলেন, “আমরা নিজেরাই খাইতে পারি না, আপনি টেন্ডার সাবমিট কইরেন না।” শাহজাহান এর কারণ জানতে চাইলে রুবেল জানান, তাদের ‘পার্টির সিস্টেম’ আছে এবং বাইরে থেকে কেউ টেন্ডার জমা দিলে অপমানিত হতে হবে।
পরবর্তীতে কথোপকথনে যুক্ত হন হারুন নামের আরেক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি হুমায়ুন কবীর লালুর ভাই বলে পরিচয় দেন। তিনি শাহজাহানকে ঈদের আগেই তাদের সঙ্গে বসে সমাধান করতে বলেন এবং ভবিষ্যতে কাজ করতে হলে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করার শর্ত দেন।
শাহজাহান জানান, তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর পর একটি লট পেয়েছেন এবং রাজনীতি করার পাশাপাশি সঠিক নিয়মেই দরপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি অতীতে ছাত্রদলের শিক্ষা সম্পাদক ছিলেন এবং এখনও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান রুবেল বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি অবৈধ কোনো টাকার চিন্তাও করি না।” তবে অডিওতে তার কণ্ঠ স্পষ্টভাবে শনাক্তযোগ্য বলে দাবি করেছেন অনেকে।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা বলেন, “ঘটনাটি আগে শুনিনি, এখন প্রথম শুনলাম।”
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সওজ রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরীন ঝিনুক বিষয়টি বৃক্ষপালনবিদের কার্যালয়ের আওতাধীন বলে জানিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাওয়া যায়নি।