দু’দিনের অপেক্ষার পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ফল। তবে পুরো প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনকে পড়তে হয়েছে নানা ভোগান্তিতে। কারণ, এবারও ভোট গণনা হয়েছে ম্যানুয়ালি। ফলে বিলম্বিত ফল প্রকাশ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন কমিশনের সদস্যরা।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ছাত্রদলসহ চারটি প্যানেল ও পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন। শুধু তাই নয়, বিএনপিপন্থি চার শিক্ষক ও দুজন কমিশনার পদত্যাগ করায় কার্যত চাপের মুখে পড়েন কমিশনের বাকি সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত টানা তিন দিনের প্রচেষ্টা, ধৈর্য ও পারস্পরিক সহযোগিতায় কমিশন ফলাফল ঘোষণা করতে সক্ষম হয়।
ফল ঘোষণা শেষে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের চোখেমুখে ছিল তৃপ্তির আনন্দ। কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. লুৎফুল এলাহী তো আনন্দে কেঁদেই ফেলেন। তার অঝোর কান্নার ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিহাস বিভাগের এই জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ১৫ জুলাইয়ের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। উপাচার্যের বাসভবনে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে গিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হন তিনি। এতে তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তবে চিকিৎসকদের মতে, তার চোখের আলো ফেরার সম্ভাবনা এখনও রয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল
২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতেই নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট।
-
ভিপি: স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু
-
জিএস: মাজহারুল ইসলাম (সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট)
-
এজিএস (ছাত্র): ফেরদৌস আল হাসান (শিবির-সমর্থিত)
-
এজিএস (ছাত্রী): আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা (শিবির-সমর্থিত)
এই ফলাফলে দীর্ঘদিন পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির চিত্রে নতুন মোড় এসেছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।