কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপুকে স্টেজ থেকে লাথি মেরে ফেলে দিতাম- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরীর এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে তিন মিনিট পাঁচ সেকেন্ডের ওই বক্তব্যটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তার কর্মীদের উদ্দেশ করে বলছেন- আমার সিদ্ধান্ত ছিল এমন। প্রথমে প্রতিবাদ করব। পরে দেখলাম যে সম্মেলনটা ভাঙার দায়িত্ব আমার ওপর আসবে। আমি ওইখানেই টিপুকে বন্ধ করে দিতাম নইলে লাথি মেরে ফেলে দিতাম; যা হবার হতো। যা ঘটতো তার দায়দায়িত্ব আমার ওপরে আসত। বহু কষ্টে ধৈর্য ধরে বসেছিলাম। আমার মধ্যে ক্ষোভ প্রতিক্রিয়া এটাও কেউ দেখে না। আমার যারা ছিল তাদের মধ্যে কোনো রিঅ্যাকশন দেখলাম না- যে এটা কি বলল? কেমনে বলল? এখানে কিভাবে কয় এই কথা। কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদেরও দেখি নাই আপনাদের কর্মীদেরকেও আমি দেখি নাই। কথা পরিষ্কার আমি আপনাদের ওপর হতাশ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী আরও বলেন, দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। এখন আওয়ামী লীগ নাই। আপনারা তো ক্ষমতায় চলেই গেছেন। কে কী খাবেন হিসাব করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু। তিনি বলেছিলেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার আওতায় ছয়টি আসন রয়েছে- প্রতিটি আসনে কোনো না কোনো নেতা অভিভাবক হিসেবে কাজ করেছেন। আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের অত্যাচার নির্যাতন মামলা-হামলায় যেসব নেতা পাশে ছিল সেই সমস্ত নেতাদেরই মূল্যায়ন করা হবে। কুমিল্লা জেলার হেডকোয়ার্টার এ সদর আসন। এ সদর আসনের মাটি ও মানুষের নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন এই সদরে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপুর ওই বক্তব্যের কারণেই বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী তার নেতাকর্মীদের সম্মেলন পরবর্তী একটি সভায় এ মন্তব্যটি করেছিলেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, উনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। দলের একটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন। আমি কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক- উনি আমাকে নিয়ে এভাবে বলতে পারেন না। বর্তমান প্রজন্ম বা আমরা উনাদের কাছ থেকে শিখব। আমরা উনাদের কাছ থেকে কী শিখতেছি? উনার অনেক বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। এত বছরে কি উনি এই শিখলেন। উনার সঙ্গে এটা যায় না।
মনিরুল চৌধুরী বলেন, এমন বক্তব্য আমি দেইনি। আমি মেজাজি মানুষ সত্য, তবে এটাও সত্য আমি সংযত। এ রকম কথা একজন রাজনৈতিক কর্মী সম্পর্কে যার সঙ্গে আমি দল করি এটা পাবলিকলি বলার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের একটা ঘরোয়া মিটিং ছিল। ওই মিটিংয়ে আমি কর্মীদের বলেছি টিপু যে- ওই দিন সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছিল তোমরা প্রতিবাদ করলে না কেন? ওই দিন আমি প্রতিবাদ করি নাই। আমি প্রতিবাদ করলে সম্মেলনটা এফেক্ট হয়ে যেত। এর মধ্যেই এই শব্দটা কিভাবে ঢুকল আই ডোন্ট নো। সবাই উপস্থিত কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করেছি এমন কথা আমি বলেছি কিনা তারা বলতে পারছে না। রাগ আমার বেশি থাকতে পারে কিন্তু এই ভাষা প্রকাশ হবে কেন। সবাই ভদ্রলোক সবারই একটা পজিশন আছে।