চট্টগ্রামের রাউজানে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আবদুল হাকিম (৬৫) কে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার মদুনাঘাট ব্রিজসংলগ্ন হাটহাজারী রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম নগরীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে সন্ধ্যার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আবদুল হাকিম রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের পাচখাইন গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় হামিম এগ্রো নামের একটি গরুর খামারের মালিক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া সময়ের কন্ঠস্বর-কে বলেন, ‘গুলির খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ঘটনাস্থল থেকে নিহতের গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হাটহাজারী রোডে মদুনাঘাট ব্রিজের কাছে পৌঁছালে মোটর সাইকেলযোগে আসা অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি গাড়িতেই লুটিয়ে পড়েন। পরে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
নিহতের পরিচিতজনরা জানান, আবদুল হাকিম রাউজান রাজনীতিতে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিএনপি গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে এলাকায় দুই চৌধুরী গ্রুপের মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চলছিল। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।
এদিকে ঘটনার পর রাউজান ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, রাস্তায় মানুষের চলাচল কমে যায়। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে এটি একটি টার্গেটেড কিলিং বলে মনে হচ্ছে। তবে ঘটনার পেছনের কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে।