ঢাকা ১০:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্ম অবমাননা মামলায় বাউল আবুল সরকার ইস্যুতে ফের অবস্থান স্পষ্ট করল এনসিপি

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৮:৪৮:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৩৩০ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কারাগারে থাকা বাউল শিল্পী আবুল সরকারকে কেন্দ্র করে ফের এক বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দলটি জানায়, তাদের আগের বিবৃতিতে কেবল মানববন্ধনে হামলার নিন্দা জানানো হয়েছিল; ধর্ম বা ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি কোনো অসম্মান বা সমর্থন তারা দেয়নি।

এনসিপির ধর্ম ও সম্প্রীতি সেল সম্পাদক তারেক রেজা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক বিবৃতিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ভুল ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। দলটি স্পষ্ট জানায়, বাউল আবুল সরকারের বক্তব্য এবং তার জামিনের দাবিতে মানববন্ধনকারীদের ওপর হামলা — এ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। আবুল সরকারের বক্তব্যের কিছু অংশ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে এবং এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে আদালতই আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন— এনসিপি সেই বিচার প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা রাখে।

বিবৃতিতে এনসিপি জানায়, অরাজনৈতিক, অহিংস উপায়ে সভা-সমাবেশ বা মানববন্ধনের অধিকার সবার আছে। যেকোনো গোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ কার্যক্রমে হামলা তাদের রাজনৈতিক অধিকারের লঙ্ঘন, এবং আগের বিবৃতিতে কেবল সেই হামলারই নিন্দা জানানো হয়েছিল। কিন্তু এটিকে ধর্ম অবমাননার পক্ষে অবস্থান হিসেবে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার।

দলটি আরও স্পষ্ট করে জানায়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধানগত অধিকার হলেও ধর্ম অবমাননা আইনত অপরাধ এবং এনসিপি কখনোই ধর্ম অবমাননাকে মতপ্রকাশের অধিকার বলে মনে করে না। তাদের বক্তব্যের অর্থ ছিল— যেসব সাংস্কৃতিক বা আধ্যাত্মিক চর্চা আইনসঙ্গত, রাষ্ট্রকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এনসিপি কোনো ধর্মের বিরোধী নয়। বরং ধর্মবিদ্বেষ এবং ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ— উভয়ের বিরুদ্ধেই দলের অবস্থান দৃঢ়। তারা দাবি করে, ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে— এমন প্রচার সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইসলামবিদ্বেষ ও ধর্মীয় নির্যাতনের বিরুদ্ধেই জনগণ জুলাই গণআন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বলেও দলটি মনে করে।

এছাড়া বাংলাদেশে দায়িত্বশীল মূলধারার আলেমসমাজের ভূমিকার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এনসিপি বলে, ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তির পরিস্থিতিতে আলেমরা সবসময় শান্তি, সংযম ও আইনের শাসনের পথে মানুষকে ফিরিয়ে আনেন। তাদের এই দাওয়াতি ঐতিহ্যের প্রতি দলটি সম্পূর্ণ সমর্থন জানায়।

বিবৃতির শেষে এনসিপি আবারও জানায়, অপরাধ করলে বিচার করবে আদালত, জনতা নয়। আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা ইসলামসম্মত নয়। এনসিপি শান্তি, ন্যায়, সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের রাজনীতিতে অটল আছে বলে পুনর্ব্যক্ত করে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে ব্রীজের পাটাতন ভেঙে ভোগান্তি, মেরামত করালেন বিএনপি নেতা কায়কোবাদ

ধর্ম অবমাননা মামলায় বাউল আবুল সরকার ইস্যুতে ফের অবস্থান স্পষ্ট করল এনসিপি

আপডেট সময় ০৮:৪৮:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কারাগারে থাকা বাউল শিল্পী আবুল সরকারকে কেন্দ্র করে ফের এক বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দলটি জানায়, তাদের আগের বিবৃতিতে কেবল মানববন্ধনে হামলার নিন্দা জানানো হয়েছিল; ধর্ম বা ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি কোনো অসম্মান বা সমর্থন তারা দেয়নি।

এনসিপির ধর্ম ও সম্প্রীতি সেল সম্পাদক তারেক রেজা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক বিবৃতিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ভুল ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। দলটি স্পষ্ট জানায়, বাউল আবুল সরকারের বক্তব্য এবং তার জামিনের দাবিতে মানববন্ধনকারীদের ওপর হামলা — এ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। আবুল সরকারের বক্তব্যের কিছু অংশ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে এবং এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে আদালতই আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন— এনসিপি সেই বিচার প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা রাখে।

বিবৃতিতে এনসিপি জানায়, অরাজনৈতিক, অহিংস উপায়ে সভা-সমাবেশ বা মানববন্ধনের অধিকার সবার আছে। যেকোনো গোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ কার্যক্রমে হামলা তাদের রাজনৈতিক অধিকারের লঙ্ঘন, এবং আগের বিবৃতিতে কেবল সেই হামলারই নিন্দা জানানো হয়েছিল। কিন্তু এটিকে ধর্ম অবমাননার পক্ষে অবস্থান হিসেবে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার।

দলটি আরও স্পষ্ট করে জানায়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধানগত অধিকার হলেও ধর্ম অবমাননা আইনত অপরাধ এবং এনসিপি কখনোই ধর্ম অবমাননাকে মতপ্রকাশের অধিকার বলে মনে করে না। তাদের বক্তব্যের অর্থ ছিল— যেসব সাংস্কৃতিক বা আধ্যাত্মিক চর্চা আইনসঙ্গত, রাষ্ট্রকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এনসিপি কোনো ধর্মের বিরোধী নয়। বরং ধর্মবিদ্বেষ এবং ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ— উভয়ের বিরুদ্ধেই দলের অবস্থান দৃঢ়। তারা দাবি করে, ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে— এমন প্রচার সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইসলামবিদ্বেষ ও ধর্মীয় নির্যাতনের বিরুদ্ধেই জনগণ জুলাই গণআন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বলেও দলটি মনে করে।

এছাড়া বাংলাদেশে দায়িত্বশীল মূলধারার আলেমসমাজের ভূমিকার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এনসিপি বলে, ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তির পরিস্থিতিতে আলেমরা সবসময় শান্তি, সংযম ও আইনের শাসনের পথে মানুষকে ফিরিয়ে আনেন। তাদের এই দাওয়াতি ঐতিহ্যের প্রতি দলটি সম্পূর্ণ সমর্থন জানায়।

বিবৃতির শেষে এনসিপি আবারও জানায়, অপরাধ করলে বিচার করবে আদালত, জনতা নয়। আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা ইসলামসম্মত নয়। এনসিপি শান্তি, ন্যায়, সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের রাজনীতিতে অটল আছে বলে পুনর্ব্যক্ত করে।