ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ২০১৩ সালে মাস্টার্সের ফলাফল স্থগিত হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলামের। এক যুগ পর অবশেষে সেই স্থগিত ফল প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রকাশিত ফলে তিনি সিজিপিএ ৪ (আউট অব ৪) পেয়ে বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. হাসনাত কবীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এমএসসি (থিসিস গ্রুপ) পরীক্ষা ২০১২—যা ২০১৩ এবং ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল—সে পরীক্ষায় রফিকুল ইসলাম উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফলটি অস্থায়ীভাবে প্রকাশ করা হয়েছে এবং সিন্ডিকেট অনুমোদনের পর কার্যকর হবে।
রফিকুল ইসলাম ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগর শাখার শিক্ষা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। স্নাতক পর্যায়ে তিনি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হন। কিন্তু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং থিসিস জালিয়াতির অভিযোগ এনে ২০১৩ সালে তার ফল স্থগিত করা হয়, যা তাকে দীর্ঘ সময় মানসিক ও পারিবারিক সংকটে ফেলেছিল।
ফল প্রকাশের পর প্রতিক্রিয়ায় রফিকুল বলেন,
“এক যুগ পরে ফল পেয়ে আমার জীবনের অন্যতম আনন্দঘন মুহূর্ত এসেছে। আমার পরিবার বড় ধাক্কা খেয়েছিল। আমি দীর্ঘদিন ট্রমার মধ্যে ছিলাম। আজ আল্লাহর কাছে অসীম শুকরিয়া।”
তিনি জানান, একাডেমিক হেনস্তা ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তিনি হাল ছাড়েননি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উইকেন্ড প্রোগ্রামে মাস্টার্স (সিজিপিএ ৪) শেষ করেন। পরে মানারাতে কিছুদিন পড়ার পর চীনে মাস্টার্স ও পিএইচডি শুরু করেন। বর্তমান তিনি সৌদির কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন।
তার ফল প্রকাশে রাকসুর ভিপি ও শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন,
“তার ওপর করা ফ্যাসিবাদী জুলুমের যুগাবসান ঘটল আজ। রফিকুল ভাইয়ের মতো আরও অসংখ্য শিবির নেতাকর্মী একাডেমিক হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছেন।”
১২ বছর স্থগিত থাকার পর একটি ফল প্রকাশকে ঘিরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।




















