বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক গবেষক দল একটি নতুন ভূগর্ভস্থ ফাটলরেখা শনাক্ত করেছে, যা জামালপুর ও ময়মনসিংহ থেকে ভারতের কলকাতা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই ফাটলরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০ কিলোমিটার এবং এর একটি অংশ ভূমিকম্পপ্রবণ, যা সর্বোচ্চ ৬ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারে।
গবেষণাটি বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আক্তারুল আহসানের নেতৃত্বে করা হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, তুরস্ক ও বাংলাদেশের বিভিন্ন গবেষকও অংশ নেন। আক্তারুল আহসান জানান, ফাটলরেখাটি তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে—এক অংশে স্বল্প মাত্রার, এক অংশে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকি এবং এক অংশে ঝুঁকি নেই।
গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন শনাক্ত ফাটলরেখার জন্ম হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে। এরপর এটি কিছু সময় নিষ্ক্রিয় থাকার পর পুনরায় সক্রিয় হয়েছে। গবেষণায় ইন্ডিয়ান প্লেটের প্রতি বছরে ৪.৬ সেন্টিমিটার গতির কারণে এই ফাটলসহ আরও অনেক ফাটলরেখা সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন ফাটলরেখার সঙ্গে বড় মাত্রার কয়েকটি ভূমিকম্প এবং ব্রহ্মপুত্র নদীর গতিপথ পরিবর্তনের সংযোগের প্রমাণও পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৮৮৫ সালে মানিকগঞ্জে ঘটে যাওয়া ‘বেঙ্গল আর্থকোয়েক’।
বাংলাদেশে ২১ ও ২২ নভেম্বরের ভূমিকম্পে ৫.৭ মাত্রার কম্পনে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্তারুল আহসান জানান, গবেষণার বিস্তারিত ফলাফল ডিসেম্বরের মধ্যভাগে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রকাশ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফুল আলম বলেন, “ফাটলরেখা থাকা মানেই উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প হবে, তা বলা যায় না, তবে আরও গবেষণায় নতুন ফাটলের সন্ধান মিলতে পারে।”
সূত্র: প্রথম আলো





















