ভারতীয় পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বাংলাদেশ অনেকটাই দেশটি থেকে আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সৌদি আরবও। ফলে পাকিস্তান ও চীনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে এ দুটি দেশ। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারতের পেঁয়াজ বাজারে—ভয়াবহ মন্দার মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানায়, বিশ্ববাজারে ভারতের পেঁয়াজচাষিদের অবস্থান নড়বড়ে হওয়ার জন্য মূল দায়ভার ভারতের নিজের নীতির ওপরই বর্তায়। স্থানীয় বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণের নামে দিল্লি প্রায়ই পূর্বঘোষণা ছাড়া পেঁয়াজ রফতানি স্থগিত বা নিষিদ্ধ করে। এই অনিশ্চয়তার কারণেই ক্রেতারা এখন স্থায়ী বিকল্প উৎস খুঁজে নিচ্ছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা সতর্ক করে বলছেন, ভারতের তৈরি পেঁয়াজের বীজ অবৈধভাবে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পৌঁছে যাচ্ছে। এসব দেশ নিজেদের উৎপাদন বাড়িয়ে দ্রুত স্বনির্ভর হয়ে উঠছে, যা ভারতের বাজার-আধিপত্য আরও দুর্বল করছে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর—এই দুই সময় বড় ধরনের রফতানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ভারত। এতে বাংলাদেশের মতো নির্ভরশীল বাজারে দাম বেড়ে যায়। ২০২০ সালে বাংলাদেশ পেঁয়াজ রফতানিতে ঘনঘন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভারতের কাছে কূটনৈতিক নোট পাঠায়।
বর্তমানে স্থানীয় কৃষককে সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশ ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি প্রায় বন্ধ রেখেছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ভারত বাংলাদেশে ৭.২৪ লাখ টন পেঁয়াজ রফতানি করেছিল—যা মোট রফতানির ৪২%। অথচ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমদানি হয়েছে মাত্র ১২ হাজার ৯০০ টন। যদিও অনেকে এর পেছনে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন, রফতানিকারকদের মতে বারবার নিষেধাজ্ঞাই ক্রেতাদের দূরে ঠেলে দিয়েছে।
ফলে বিকল্প বাজারে সরে যাওয়া বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের কারণে ভারতের পেঁয়াজ রফতানি খাত এখন বড় ধরনের সংকটে পড়েছে।


























