ঢাকা ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আবারও ট্রলারসহ ২৮ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে ভারত

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:৪৯:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫২৯ বার পড়া হয়েছে

 

পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের উপকূলীয় এলাকা থেকে বাংলাদেশি মাছ ধরার দুটি ট্রলার আটক করেছে ভারতীয় উপকূলরক্ষীবাহিনী। এই দুটি ট্রলার থেকে মোট ২৮ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত বাংলাদেশি জেলেরা দু’টি ট্রলারে টানা ১৫ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার রাতে ‘এফ বি আল্লাহ মালিক’ নামের একটি বাংলাদেশি ট্রলার ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে অভিযোগ উঠে। পরে ট্রলারের জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। এই ঘটনায় নথিপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বাংলাদেশি ট্রলার ও জেলেদের আটক করা হয়।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালের দিকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানা পুলিশের কাছে বাংলাদেশি ওই জেলেদের হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ বলছে, আটক বাংলাদেশি জেলেরা সুস্থ আছেন।

অন্যদিকে, দেশটির অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার এচেরলা মণ্ডলের মোসাভানিপেটা উপকূলের কাছে বাংলাদেশি ১৩ জেলেকে আটক করেছে শ্রীকাকুলাম জেলার উপকূলরক্ষী বাহিনী। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বাংলাদেশের ভোলা জেলার এই ১৩ জেলে সমুদ্রে মাছ ধরতে বের হন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভুলবশত সমুদ্রসীমা অতিক্রম করে ট্রলারসহ ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়েন তারা।

রবিবার স্থানীয় জেলেরা মোসাভানিপেটা উপকূলের কাছে তাদের নৌকা নোঙর করার পর এই বাংলাদেশি জেলেদের দেখতে পান এবং তারা স্থানীয়দের কাছে সাহায্য চান। স্থানীয়রা প্রথমে অভুক্ত জেলেদের উদ্ধার করে খাবার, পানি, ওষুধ সরবরাহ করেন এবং পুলিশকে খবর দেন।

খবর পেয়ে মেরিন পুলিশ সার্কেল ইন্সপেক্টর পি প্রসাদ রাও এবং স্থানীয় পুলিশের উপপরিদর্শক জি. লক্ষ্মণ রাও দ্রুত উপকূলে পৌঁছান। প্রাথমিকভাবে তাদের ভাষা ও পোশাক দেখে বাংলাদেশি বলে শনাক্ত করা হয়। ভাষাগত সমস্যার কারণে যোগাযোগের অসুবিধা হলেও স্থানীয় কয়েকজন জেলের সহায়তায় পুলিশ তাদের কাছ থেকে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। মাঝ-সমুদ্রে গত প্রায় ১৫ দিন ধরে তারা ভাসছিলেন বলে জানিয়েছেন।

পরে উপকূলরক্ষী বাহিনী এই জেলেদের আটক করে পরবর্তী তদন্তের জন্য কলিঙ্গপত্তনম থানায় হস্তান্তর করে। ভারতীয় জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে কলিঙ্গপত্তনম থানা পুলিশ জানিয়েছে।

আটক জেলেরা হলেন, সজীব (২১), জাহাঙ্গীর (৩৫), সাব্বির (২৫), খোকন (৩২), মাকসুদ (৪০), মালিক (৮০), মো. ফারুক (৫৫), মাকসুদ (৫০), নাসির (৬৫), হেলাল (২৮), ফারুক (৫০), আলম (৪৬) ও শামীম (২১)। তাদের সবাই বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার বাসিন্দা।

কলিঙ্গপত্তনম মেরিন সার্কেল ইন্সপেক্টর বি. প্রসাদ রাও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশি নাগরিক। ট্রলারে কারিগরি ত্রুটির কারণে তারা আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমা অতিক্রম করেছিলেন।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে খাবারের অভাবে শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েছেন ওই বাংলাদেশিরা। আমরা তাদের আটক করে প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করেছি এবং পরে মেরিন থানায় হস্তান্তর করেছি।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুন্সির আসনে আ.লীগের ২০০ নেতাকর্মীর বিএনপিতে যোগদানে সমালোচনার ঝড়

আবারও ট্রলারসহ ২৮ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে ভারত

আপডেট সময় ১০:৪৯:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

 

পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের উপকূলীয় এলাকা থেকে বাংলাদেশি মাছ ধরার দুটি ট্রলার আটক করেছে ভারতীয় উপকূলরক্ষীবাহিনী। এই দুটি ট্রলার থেকে মোট ২৮ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত বাংলাদেশি জেলেরা দু’টি ট্রলারে টানা ১৫ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার রাতে ‘এফ বি আল্লাহ মালিক’ নামের একটি বাংলাদেশি ট্রলার ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে অভিযোগ উঠে। পরে ট্রলারের জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। এই ঘটনায় নথিপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বাংলাদেশি ট্রলার ও জেলেদের আটক করা হয়।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালের দিকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানা পুলিশের কাছে বাংলাদেশি ওই জেলেদের হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ বলছে, আটক বাংলাদেশি জেলেরা সুস্থ আছেন।

অন্যদিকে, দেশটির অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার এচেরলা মণ্ডলের মোসাভানিপেটা উপকূলের কাছে বাংলাদেশি ১৩ জেলেকে আটক করেছে শ্রীকাকুলাম জেলার উপকূলরক্ষী বাহিনী। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বাংলাদেশের ভোলা জেলার এই ১৩ জেলে সমুদ্রে মাছ ধরতে বের হন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভুলবশত সমুদ্রসীমা অতিক্রম করে ট্রলারসহ ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়েন তারা।

রবিবার স্থানীয় জেলেরা মোসাভানিপেটা উপকূলের কাছে তাদের নৌকা নোঙর করার পর এই বাংলাদেশি জেলেদের দেখতে পান এবং তারা স্থানীয়দের কাছে সাহায্য চান। স্থানীয়রা প্রথমে অভুক্ত জেলেদের উদ্ধার করে খাবার, পানি, ওষুধ সরবরাহ করেন এবং পুলিশকে খবর দেন।

খবর পেয়ে মেরিন পুলিশ সার্কেল ইন্সপেক্টর পি প্রসাদ রাও এবং স্থানীয় পুলিশের উপপরিদর্শক জি. লক্ষ্মণ রাও দ্রুত উপকূলে পৌঁছান। প্রাথমিকভাবে তাদের ভাষা ও পোশাক দেখে বাংলাদেশি বলে শনাক্ত করা হয়। ভাষাগত সমস্যার কারণে যোগাযোগের অসুবিধা হলেও স্থানীয় কয়েকজন জেলের সহায়তায় পুলিশ তাদের কাছ থেকে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। মাঝ-সমুদ্রে গত প্রায় ১৫ দিন ধরে তারা ভাসছিলেন বলে জানিয়েছেন।

পরে উপকূলরক্ষী বাহিনী এই জেলেদের আটক করে পরবর্তী তদন্তের জন্য কলিঙ্গপত্তনম থানায় হস্তান্তর করে। ভারতীয় জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে কলিঙ্গপত্তনম থানা পুলিশ জানিয়েছে।

আটক জেলেরা হলেন, সজীব (২১), জাহাঙ্গীর (৩৫), সাব্বির (২৫), খোকন (৩২), মাকসুদ (৪০), মালিক (৮০), মো. ফারুক (৫৫), মাকসুদ (৫০), নাসির (৬৫), হেলাল (২৮), ফারুক (৫০), আলম (৪৬) ও শামীম (২১)। তাদের সবাই বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার বাসিন্দা।

কলিঙ্গপত্তনম মেরিন সার্কেল ইন্সপেক্টর বি. প্রসাদ রাও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশি নাগরিক। ট্রলারে কারিগরি ত্রুটির কারণে তারা আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমা অতিক্রম করেছিলেন।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে খাবারের অভাবে শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েছেন ওই বাংলাদেশিরা। আমরা তাদের আটক করে প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করেছি এবং পরে মেরিন থানায় হস্তান্তর করেছি।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।