আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপির প্রার্থিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে কি তাকে ভিপির পদ থেকে সরে যেতে হবে?
আইন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্র বলছে, ডাকসুর ভিপি পদ ‘লাভজনক সরকারি পদ’ নয়, ফলে নির্বাচনী আইনে এই পদ থেকে সরে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। ২০১৮ সালের প্রচলিত নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে কোনো ব্যক্তি লাভজনক সরকারি পদে থাকতে পারবেন না। তবে ডাকসু ভিপি নির্বাচিত হন ছাত্রদের ভোটে এবং তার দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা—এ কারণে পদটি সরকারি চাকরি বা লাভজনক পদ হিসেবে বিবেচিত হয় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডাকসুর ভিপি পদটি সম্পূর্ণ নির্বাচিত স্বেচ্ছাসেবামূলক নেতৃত্বের অবস্থান, যার জন্য কোনো বেতন বা সরকারি সুবিধা নেই। তাই সাংবিধানিক বা আইনগতভাবে প্রার্থী হতে তার পদত্যাগের প্রয়োজন পড়ে না।
তবে নৈতিকতা ও দায়িত্বের প্রশ্নে বিভিন্ন মহলে ভিন্নমত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মনে করছেন—ভিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জাতীয় নির্বাচনী প্রচারণা চালানো তার নিরপেক্ষতা ও সময় বণ্টনে প্রভাব ফেলতে পারে। তাদের মতে, দায়িত্বের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হলে প্রার্থিতা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ভিপির পদ থেকে সাময়িক বিরতি বা পদত্যাগ করা উত্তম হতে পারে।
অন্যদিকে ছাত্ররাজনীতির বহু পর্যবেক্ষক যুক্তি দিচ্ছেন যে, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ছাত্রনেতাদের জাতীয় রাজনীতিতে অংশ নেওয়া নতুন কিছু নয়। বরং তারা বলছেন, ছাত্ররাজনীতির নেতৃত্ব থেকেই জাতীয় নেতৃত্বের উৎপত্তি ঘটে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, “ডাকসু ভিপিকে বাধ্যতামূলকভাবে পদত্যাগ করতে হবে—এমন কোনো আইন নেই। তবে যদি তার দায়িত্ব পালনে স্বার্থসংঘাত দেখা দেয়, তখন বিশ্ববিদ্যালয় নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”
ডাকসুর ভিপির জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা ঘিরে শিক্ষাঙ্গনে ইতোমধ্যে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি ছাত্ররাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত তৈরি করবে।




















