জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আজ আপিল বিভাগে আপিল করবে প্রসিকিউশন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। তিনি জানান, আপিল দাখিলের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্রিফিং দেওয়া হবে।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে এর আগে গত ২৭ নভেম্বর জানানো হয়েছিল, ট্রাইব্যুনাল-১ প্রদত্ত রায়ে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং আরেকটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রায় পর্যালোচনা শেষে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যেই এই আপিল দায়ের করা হচ্ছে।
গত ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও কামালকে একাধিক অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তাদের দেশে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে উভয় অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় দেন এবং রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করা হয় রায় ঘোষণার নয় দিন পর।
মামলায় প্রসিকিউশন মোট পাঁচটি অভিযোগ আনলেও ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে ছয়টি ঘটনাকে বিবেচনায় নেন। প্রথম অভিযোগে ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে উসকানিমূলক বক্তব্য, ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে ফোনালাপে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ফাঁসির হুমকি ও নির্দেশ এবং এর ফলশ্রুতিতে রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এসব ঘটনায় শেখ হাসিনা ও কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগে ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর ফোনালাপের বিষয়টি উঠে আসে। এসব কথোপকথনে ড্রোনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের অবস্থান শনাক্ত, হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং একই দিনে আশুলিয়ায় আরও ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে প্রমাণিত ধরে নেওয়া হয়। এসব ঘটনায় শেখ হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে জুলাইয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়।




















