আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পর দেশে একটি জাতীয় ঐকমত্যভিত্তিক সরকার গঠনের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে এলে জামায়াত সেই সরকারে অংশ নিতে প্রস্তুত।
ঢাকার একটি আবাসিক এলাকায় নিজের কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অন্তত পাঁচ বছরের জন্য একটি স্থিতিশীল দেশ চায় জামায়াত। দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছালে সবাই মিলে সরকার পরিচালনা করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে, দুর্নীতিবিরোধী কর্মসূচি জাতীয় সরকারের একটি যৌথ লক্ষ্য হওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রী কে হবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, যে দল সবচেয়ে বেশি আসন পাবে, সেই দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী হবেন। জামায়াত সর্বোচ্চ আসন পেলে তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত দলীয় ফোরাম নেবে।
এদিকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতা হারানোর পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানকে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। ভারত দীর্ঘদিন তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিল এবং দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়িয়েছিল।
নয়াদিল্লি নতুন সরকার গঠনের প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, চলতি বছরে তিনি একজন ভারতীয় কূটনীতিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে ওই কূটনীতিক বৈঠকটি প্রকাশ্যে না আনার অনুরোধ করেছিলেন। অন্য দেশের কূটনীতিকরা প্রকাশ্যে সাক্ষাৎ করলেও ভারতীয় কর্মকর্তার এমন অনুরোধ ছিল বলে জানান তিনি। সম্পর্ক উন্নয়নের বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের আমির।
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া পায়নি রয়টার্স। তবে সূত্রের বরাতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ভারত ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে জামায়াতের অতীত সম্পর্ক প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দলটি সব দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক চায়। কোনো একটি দেশের দিকে ঝুঁকে পড়ার নীতি তাদের নেই।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো নতুন সরকারই তাকে নিয়ে স্বস্তিতে থাকবে না। ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি হন সাহাবুদ্দিন। তিনি নিজেও প্রয়োজনে মেয়াদের মাঝপথে পদ ছাড়তে প্রস্তুত বলে সম্প্রতি রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন।
তবে বুধবার রয়টার্সের সঙ্গে ফোনালাপে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, তিনি বিষয়টি আরও জটিল করতে চান না।










