ঢাকা ০২:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেনা-পুলিশের সামনে আনসার ক্যাম্পে সংগঠিত হামলা-ছিনতাই, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:৩১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫৩৩ বার পড়া হয়েছে

 

নীলফামারীর ডিমলায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতেই একটি আনসার ক্যাম্পে ভয়াবহ, পরিকল্পিত ও রাষ্ট্রবিরোধী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুড়ি তিস্তা নদী পুনর্খনন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে সংঘটিত এই তাণ্ডবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যবহৃত ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছিনতাই, আনসার ক্যাম্পে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালানো হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সরকারি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বুড়ি তিস্তা নদী সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প ও খনন প্রকল্প এলাকায় এই সহিংসতা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদী খনন কাজের প্রস্তুতি নিলে স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক চলাকালে সরকারি ছুটির দিনে খনন কাজের প্রস্তুতি নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংবাদকর্মী ও স্থানীয়দের আপত্তির মুখে পাউবো সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বদলে তা দ্রুত সহিংস ও সংগঠিত হামলায় রূপ নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এটি কোনো তাৎক্ষণিক উত্তেজনা নয়; বরং পরিকল্পিত, সংগঠিত ও উসকানিমূলক হামলা। সন্ধ্যার দিকে আলীম নামের এক ব্যক্তি মাইকিং করে লোকজন জড়ো করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই হাজারের বেশি লোক সংঘবদ্ধ হয়ে আনসার ক্যাম্পে হামলা চালায়।

ওই ক্যাম্পে কর্মরত এক আনসার সদস্য মোঃ এনামুল হক জানান, হামলাকারীরা আনসার সদস্যদের থাকার কক্ষ, অফিস, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ক্যাম্পে সংরক্ষিত রেশন সামগ্রী, আনসার সদস্যদের পোশাক ও ব্যক্তিগত মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যবহৃত ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছিনতাই, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পুলিশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বুড়ি তিস্তা নদী খনন প্রকল্পে ব্যবহৃত ৭টি এক্সকাভেটর ভাঙচুর করে অচল করে দেওয়া হয়। ঘটনার ভিডিও ও তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে একাধিক সাংবাদিক হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ আনসার সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা মিলিয়ে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, “এই হামলা ও ভাঙচুরে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এটি একটি গুরুতর অপরাধ। সরকারি জমি উদ্ধারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট মো. মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া, পিভিএম বলেন, “আনসার সদস্যদের ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, রেশন ও পোশাক ছিনতাই করা হয়েছে। এটি বাহিনীর নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত।”

নীলফামারীর পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, পিপিএম বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ছিনতাইকৃত গুলি উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।”

পুলিশ সুপার আরো জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।”

কত সম্পদের মালিক তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান?

সেনা-পুলিশের সামনে আনসার ক্যাম্পে সংগঠিত হামলা-ছিনতাই, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আপডেট সময় ১০:৩১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

 

নীলফামারীর ডিমলায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতেই একটি আনসার ক্যাম্পে ভয়াবহ, পরিকল্পিত ও রাষ্ট্রবিরোধী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুড়ি তিস্তা নদী পুনর্খনন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে সংঘটিত এই তাণ্ডবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যবহৃত ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছিনতাই, আনসার ক্যাম্পে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালানো হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সরকারি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বুড়ি তিস্তা নদী সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প ও খনন প্রকল্প এলাকায় এই সহিংসতা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদী খনন কাজের প্রস্তুতি নিলে স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক চলাকালে সরকারি ছুটির দিনে খনন কাজের প্রস্তুতি নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংবাদকর্মী ও স্থানীয়দের আপত্তির মুখে পাউবো সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার বদলে তা দ্রুত সহিংস ও সংগঠিত হামলায় রূপ নেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এটি কোনো তাৎক্ষণিক উত্তেজনা নয়; বরং পরিকল্পিত, সংগঠিত ও উসকানিমূলক হামলা। সন্ধ্যার দিকে আলীম নামের এক ব্যক্তি মাইকিং করে লোকজন জড়ো করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই হাজারের বেশি লোক সংঘবদ্ধ হয়ে আনসার ক্যাম্পে হামলা চালায়।

ওই ক্যাম্পে কর্মরত এক আনসার সদস্য মোঃ এনামুল হক জানান, হামলাকারীরা আনসার সদস্যদের থাকার কক্ষ, অফিস, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ক্যাম্পে সংরক্ষিত রেশন সামগ্রী, আনসার সদস্যদের পোশাক ও ব্যক্তিগত মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যবহৃত ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছিনতাই, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পুলিশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বুড়ি তিস্তা নদী খনন প্রকল্পে ব্যবহৃত ৭টি এক্সকাভেটর ভাঙচুর করে অচল করে দেওয়া হয়। ঘটনার ভিডিও ও তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে একাধিক সাংবাদিক হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ আনসার সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা মিলিয়ে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, “এই হামলা ও ভাঙচুরে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এটি একটি গুরুতর অপরাধ। সরকারি জমি উদ্ধারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট মো. মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া, পিভিএম বলেন, “আনসার সদস্যদের ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, রেশন ও পোশাক ছিনতাই করা হয়েছে। এটি বাহিনীর নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত।”

নীলফামারীর পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, পিপিএম বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ছিনতাইকৃত গুলি উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।”

পুলিশ সুপার আরো জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।”