ঢাকা ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আসুন, বছরের শেষ রাতে আল্লাহর কাছে সারা বছরের পাপের জন্য ক্ষমা চাই; নতুন করে পাপের পথে না জড়াই

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১২:৪০:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৬
  • ৫২৫ বার পড়া হয়েছে

 

আসুন বছরের শেষ দিনে আল্লাহকে স্মরণ করি। সারা বছরের পাপের জন্য রবের কাছে ক্ষমা চাই— নতুন করে পাপের পথে না জড়াই। বছরের শেষ রাত এলেই এক শ্রেণির মানুষ এটিকে আনন্দ, উচ্ছৃঙ্খলতা ও সীমালঙ্ঘনের রাত হিসেবে বেছে নেয়। অথচ একজন মুমিনের জন্য বছরের শেষ মানে কেবল আরেকটি রাত নয়— এটি হিসাবের স্মরণ, আত্মসমালোচনার সময় এবং রবের দিকে ফিরে আসার সুবর্ণ সুযোগ। ইসলাম আমাদের শেখায়, সময়ের পরিবর্তন নয়— মানুষের অন্তরের পরিবর্তনই প্রকৃত সাফল্য।

সময় আল্লাহর আমানত

যে সময় আল্লাহর স্মরণ ছাড়া, গুনাহ ও অবাধ্যতায় কাটে—সে সময় আমাদের ক্ষতির পাল্লা ভারী করে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে সময়ের শপথ করে বলেছেন—

وَالْعَصْرِ ۝ إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ

‘সময়ের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।’ (সুরা আল-আসর: আয়াত ১–২)

প্রচলিত ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’—কিসের উৎসব?

এই রাতে যা ঘটে, তার অনেক কিছুই ইসলামের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ে— অশালীনতা, বেহায়াপনা, মাদক, অবৈধ সম্পর্ক, গান–বাদ্য এসব অপচয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْحِرَ وَالْحَرِيرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ

‘আমার উম্মতের একদল লোক ব্যভিচার, রেশম, মদ ও গান–বাদ্যকে হালাল মনে করবে।’ (বুখারি ৫৫৯০)

আজ এই বাস্তবতা আমাদের চোখের সামনেই। বছরের শেষ রাত— গুনাহের নয়, তওবার রাত হোক। একজন মুমিনের জন্য বছরের শেষ রাত হওয়া উচিত—

আত্মসমালোচনা, তওবা, কান্না আর আল্লাহর দরবারে ফিরে আসার রাত। আল্লাহ বলেন—

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا

‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে আন্তরিক তওবা করো।’ (সুরা আত-তাহরিম: আয়াত ৮)

তওবা মানে শুধু মুখে বলা নয়, তাওবা হলো— গুনাহ ছেড়ে দেওয়া, অনুশোচনা করা এবং ভবিষ্যতে গুনাহ না করার দৃঢ় সংকল্প করা।

আল্লাহর রহমতের দরজা সবসময় খোলা

আজকের বছরের শেষ রাতের এক ফোঁটা চোখের জল, এক মুহূর্তের আন্তরিক অনুশোচনা— আল্লাহর কাছে পাহাড়সম গুনাহ মাফের কারণ হতে পারে। যারা ভাবে—‘আমার গুনাহ অনেক বেশি’— তাদের জন্য আল্লাহর ঘোষণা—

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ

‘হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।’ (সুরা আজ-জুমার: আয়াত ৫৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর রাত কাটানোর শিক্ষা

রাসুলুল্লাহ (সা.) এত গুনাহমুক্ত হয়েও রাতের পর রাত ইবাদতে কাটাতেন। একদিন তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, আল্লাহ তাআলা তো আপনার সামনের-পেছনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তাবে আপনি এত ইবাদত-বন্দেগি করেন কেন? তিনি বলেন—

أَفَلَا أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا

‘আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?’ (বুখারি ৪৮৩৭)

আমরা গুনাহে ডুবে থেকেও যদি একটি রাত আল্লাহর জন্য দিতে না পারি—তবে সেটা ভেবে দেখা জরুরি।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

كُلُّ بَنِي آدَمَ خَطَّاءٌ، وَخَيْرُ الْخَطَّائِينَ التَّوَّابُونَ

‘আদম সন্তানের সবাই গুনাহগার, আর উত্তম গুনাহগার হলো তারা—যারা বেশি তওবা করে।’ (তিরমিজি ২৪৯৯)

সুতরাং বছরের শেষ রাত আমাদের কাছে আনন্দের নয় বরং সতর্কতার বার্তা। হয়তো আরেকটি বছর আমাদের জীবনে নাও আসতে পারে। তাই আজই বলি—

‘গুনাহকে না, তওবাকে হ্যাঁ’;

‘নফসকে না, আল্লাহকে হ্যাঁ’।

আসুন, বছরের শেষ রাতটা কাটাই সেজদায়, চোখের পানিতে আর নতুন জীবনের অঙ্গীকারের।

কত সম্পদের মালিক তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান?

আসুন, বছরের শেষ রাতে আল্লাহর কাছে সারা বছরের পাপের জন্য ক্ষমা চাই; নতুন করে পাপের পথে না জড়াই

আপডেট সময় ১২:৪০:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৬

 

আসুন বছরের শেষ দিনে আল্লাহকে স্মরণ করি। সারা বছরের পাপের জন্য রবের কাছে ক্ষমা চাই— নতুন করে পাপের পথে না জড়াই। বছরের শেষ রাত এলেই এক শ্রেণির মানুষ এটিকে আনন্দ, উচ্ছৃঙ্খলতা ও সীমালঙ্ঘনের রাত হিসেবে বেছে নেয়। অথচ একজন মুমিনের জন্য বছরের শেষ মানে কেবল আরেকটি রাত নয়— এটি হিসাবের স্মরণ, আত্মসমালোচনার সময় এবং রবের দিকে ফিরে আসার সুবর্ণ সুযোগ। ইসলাম আমাদের শেখায়, সময়ের পরিবর্তন নয়— মানুষের অন্তরের পরিবর্তনই প্রকৃত সাফল্য।

সময় আল্লাহর আমানত

যে সময় আল্লাহর স্মরণ ছাড়া, গুনাহ ও অবাধ্যতায় কাটে—সে সময় আমাদের ক্ষতির পাল্লা ভারী করে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে সময়ের শপথ করে বলেছেন—

وَالْعَصْرِ ۝ إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ

‘সময়ের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।’ (সুরা আল-আসর: আয়াত ১–২)

প্রচলিত ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’—কিসের উৎসব?

এই রাতে যা ঘটে, তার অনেক কিছুই ইসলামের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ে— অশালীনতা, বেহায়াপনা, মাদক, অবৈধ সম্পর্ক, গান–বাদ্য এসব অপচয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْحِرَ وَالْحَرِيرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ

‘আমার উম্মতের একদল লোক ব্যভিচার, রেশম, মদ ও গান–বাদ্যকে হালাল মনে করবে।’ (বুখারি ৫৫৯০)

আজ এই বাস্তবতা আমাদের চোখের সামনেই। বছরের শেষ রাত— গুনাহের নয়, তওবার রাত হোক। একজন মুমিনের জন্য বছরের শেষ রাত হওয়া উচিত—

আত্মসমালোচনা, তওবা, কান্না আর আল্লাহর দরবারে ফিরে আসার রাত। আল্লাহ বলেন—

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا

‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে আন্তরিক তওবা করো।’ (সুরা আত-তাহরিম: আয়াত ৮)

তওবা মানে শুধু মুখে বলা নয়, তাওবা হলো— গুনাহ ছেড়ে দেওয়া, অনুশোচনা করা এবং ভবিষ্যতে গুনাহ না করার দৃঢ় সংকল্প করা।

আল্লাহর রহমতের দরজা সবসময় খোলা

আজকের বছরের শেষ রাতের এক ফোঁটা চোখের জল, এক মুহূর্তের আন্তরিক অনুশোচনা— আল্লাহর কাছে পাহাড়সম গুনাহ মাফের কারণ হতে পারে। যারা ভাবে—‘আমার গুনাহ অনেক বেশি’— তাদের জন্য আল্লাহর ঘোষণা—

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ

‘হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।’ (সুরা আজ-জুমার: আয়াত ৫৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর রাত কাটানোর শিক্ষা

রাসুলুল্লাহ (সা.) এত গুনাহমুক্ত হয়েও রাতের পর রাত ইবাদতে কাটাতেন। একদিন তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, আল্লাহ তাআলা তো আপনার সামনের-পেছনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তাবে আপনি এত ইবাদত-বন্দেগি করেন কেন? তিনি বলেন—

أَفَلَا أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا

‘আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?’ (বুখারি ৪৮৩৭)

আমরা গুনাহে ডুবে থেকেও যদি একটি রাত আল্লাহর জন্য দিতে না পারি—তবে সেটা ভেবে দেখা জরুরি।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

كُلُّ بَنِي آدَمَ خَطَّاءٌ، وَخَيْرُ الْخَطَّائِينَ التَّوَّابُونَ

‘আদম সন্তানের সবাই গুনাহগার, আর উত্তম গুনাহগার হলো তারা—যারা বেশি তওবা করে।’ (তিরমিজি ২৪৯৯)

সুতরাং বছরের শেষ রাত আমাদের কাছে আনন্দের নয় বরং সতর্কতার বার্তা। হয়তো আরেকটি বছর আমাদের জীবনে নাও আসতে পারে। তাই আজই বলি—

‘গুনাহকে না, তওবাকে হ্যাঁ’;

‘নফসকে না, আল্লাহকে হ্যাঁ’।

আসুন, বছরের শেষ রাতটা কাটাই সেজদায়, চোখের পানিতে আর নতুন জীবনের অঙ্গীকারের।